আজান ও ইকামতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

আজকে আমরা এ হাদিসে আলোচনা করছি আজান ও ইকামতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস। যেসকল নামাযের জন্য আযান দিতে হয় এই সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পেতে চান তাহলে আজকে আর্টিকেল শুধুমাত্র আপনার জন্য কারণ আজ আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলছি আজান ও একামতের ফজিলত সম্পর্কে।
আজান ও ইকামতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
ইতিমধ্যেই আযান সংক্রান্ত বিবিধ মাসায়েল সম্পর্কে হাদিস রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানিনা এইবার আগে থেকে আযান ও ইকামতের শর্তসমূহ কত গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

ভূমিকা


এই হাদিসে আযানের ফজিলত উল্লেখিত হয়েছে, এবং আযানের মুখস্থ হওয়া একটি মুসলিম জনগণের মধ্যে আদরের বিষয়ে প্রেরনা করে। এছাড়াও, এ হাদিসে পরিষ্কার করা হয়েছে যে, আল্লাহ তার মুখের সব মস্তিষ্ক পরিষ্কার করবেন। এতে মুসলিম মুখরিত হওয়া একটি পবিত্র কাজ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আজান শোনে, তার জন্যে আদর করা হবে, যে আযানের মুখস্থ হবে তার জন্যে আদর করা হবে। আমি চাই, আল্লাহ তার মুখের সব মস্তিষ্ক পরিষ্কার করুক।" (তিরমিজী)

আযানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস


আজান সম্পর্কে কোরআনের আয়াত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- মানুষ যদি আযান দেওয়া ও প্রথম কাতারে নামাযের ফযীলত সম্পর্কে জানত তাহলে লটারি করে তা অর্জন করত।
  • আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- যখন আযান দেয়া হয় তখন শয়তান বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে, যত দূর আযানের আওয়ায পৌছে সে স্থান পর্যন্ত।
  • মুআবিয়া রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- কেয়ামতের দিন মুআজ্জিনদের গর্দান সবচেয়ে লম্বা হবে। অর্থাৎ তাদের মর্যাদা হবে অনেক বেশি।'
  • আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুআজ্জিনের আওয়াজ যতদূর পর্যন্ত মানুষ, জিন ও জীব-জন্তু শুনতে পাবে, তারা সকলেই কেয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।'
এছাড়াও আযানের ফজিলত প্রসঙ্গে আরো অনেক হাদিস রয়েছে। আযান ও ইমামতির মাঝে কোনটি বেশি ফযিলতের এ ব্যাপারে চারটি উক্তি রয়েছে:
  • ১. আযান দেয়া উত্তম।
  • ২. ইমামতি করা উত্তম।
  • ৩. উভয়টি সমান।
  • ৪. যদি ইমামতির হক সম্পর্কে ভালো করে নিজে জানে এবং তার মধ্যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য জমা হয়, তাহলে ইমামতি করা উত্তম। অন্যথায় আযান দেয়াই উত্তম।

আযান সংক্রান্ত বিবিধ মাসায়েল


আজানের ফজিলত আযানের বাক্যগুলো প্রসিদ্ধ। আযানের মধ্যে তাসভিব সুন্নাত। তাসভিব হল- ফজরের আজানে حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ )হাইয়্যা আলাল ফালাহ) এর পর দুইবার أَلْصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ )আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম) বলা।অবুঝ নাবালক, নারী ও কাফেরের আযান সহীহ হবে না। বুদ্ধিমান নাবালকের আযান সহীহ হবে।

যদি কোন কাফের আযান দেয় এবং "আশহাদুআল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহ” ও "আশহাদুআন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ" বলে তাহলে সঠিক মাযহাব অনুযায়ী এর মাধ্যমে সে মুসলমান হয়ে যাবে। আমাদের কোনো কোনো উলামায়ে কেরামের মতে মুসলমান হবে না। অবশ্য তার আযান কারো মতেই সহিহ হবে না। কারণ, ইসলাম গ্রহণের আগেই আযান শুরু করেছিল।

ইকামত সংক্রান্ত বিবিধ মাসায়েল


হানাফিদের মতে আযানে যতগুলো শব্দ ইকামতেও ততগুলো শব্দ। তবে ইকামতে حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ )হাইয়া আলাল ফালাহ) বলার পর অতিরিক্ত দুইবার قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ )কাদকা মাতিস সালাহ) বলবে। এভাবেই আসমান থেকে আযান নিয়ে অবতরণকারী ফেরেশতা ইকামত দিয়েছিলেন। সহিহ মাযহাব অনুযায়ী আযান ও ইকামত সুন্নাত। 

জুমুআর আযান হোক বা অন্য কোন নামাযের আযান হোক। কারো কারো মতে, সকল নামাযের আযান ফরজে কেফায়া। আবার কারো কারো মতে, আযান ও ইকামত জুমুআর জন্য ফরজে কিফায়া এবং অন্য নামাযে সুন্নাত। যদি ফরজে কেফায়া বলি তাহলে কোনো এলাকা বা মহল্লার লোকেরা আযান ও ইকামত ছেড়ে দিলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। আর যদি সুন্নাত বলি, তাহলে যুদ্ধ করতে হবে না। অবশ্য কারো মতে, সুন্নাত হওয়া সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। কারণ, এটি ইসলামের নিদর্শন।

আযান ও ইকামতের পদ্ধতি


আজান ও ইকামতের মধ্যে পার্থক্য আযান ধীরে ধীরে দেওয়া মুস্তাহাব। যতটুকু সম্ভব উঁচু আওয়াজে আযান দিবে। ইকামত দ্রুত দেওয়া মুস্তাহাব। আযানের তুলনায় ইকামত নিচু আওয়াজে দিবে। মুআযযিনের মধ্যে নিন্মোক্ত গুণগুলো থাকা কাম্য- সুন্দর কণ্ঠের অধিকারী হওয়া, বিশ্বস্ত হওয়া, নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হওয়া, পরহেযগার হওয়া। 

আযানের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় লক্ষ রাখবে- পবিত্র অবস্থায়, উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে আযান-ইকামত দেবে। যদি কেবলার দিকে পিঠ দিয়ে, বসে শুয়ে, অযুবিহীন অথবা গোসল ফরজ অবস্থায় আযান দেয়, তাহলে আযান হয়ে যাবে; কিন্তু মাকরুহ হবে। অযুবিহীন অবস্থার চেয়ে গোসল ফরজ অবস্থায় আযান দেয়া কঠিন মাকরুহ হবে। আর এসব অবস্থায় ইকামত দেয়া আরো কঠিন মাকরুহ।

যেসকল নামাযের জন্য আযান দিতে হয়


ফজর, জোহর, আছর, মাগরিব ও এশা পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্যই আযান দিতে হবে। আদা-কাযা আদায়কারী; মুসাফির, মুকিম; একাকী নামাজি ব্যক্তি ও জামাতে নামায আদায়কারী সকলকেই আযান দিতে হবে। সকলের মধ থেকে যে কোনো এক ব্যক্তি আযান দিলে সকলের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে একাধিক নামায একত্রে কাযা আদায় করলে শুধু প্রথম নামাযের জন্য আযান দিবে, পরবর্তী নামাযগুলোর জন্য শুধু ইকামত দিলেই হবে। 

হজের সময় দুই ওয়াক্ত নামায একত্রে আদায় করলে প্রথমটির জন্য আযান দিবে, আর উভয়টির জন্য ইকামত দিবে। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামায ব্যতীত অন্য কোন নামাযের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে আযান দেওয়ার বিধান নেই। তবে ঈদ, কুসুফ ও ইস্তেসকার নামাযের আগে 'আস- সালাতু জামি'আতুন' (জামাত শুরু হয়ে যাচ্ছে) বলা মুস্তাহাব। আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আগে ও পরের সুন্নতের ক্ষেত্রে ও নফল নামাযে আযান- ইকামত কোনোটিই দিতে হবে না।

আযান ও ইকামতের শর্তসমূহ


আজান ও ইকামতের মাঝে দোয়া করার নিয়ম ওয়াক্ত হওয়ার আগে আযান দেওয়া সহিহ নয়। এবং নামাযে দাঁড়ানোর ইচ্ছা ছাড়া ইকামত সহিহ নয়। তবে ফজরের আযান ওয়াক্ত হওয়ার আগে দেয়া জায়েজ আছে। তবে কতক্ষন আগে ফজরের আযান দেয়া শুদ্ধ হবে এ ব্যাপারে এখতেলাফ আছে। সঠিক মত হল, অর্ধেক রাত অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে ফজরের আযান দেওয় যাবে। 

কারও মতে সাহরির সময় থেকে। কারও মতে রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে ফজরের আযান দেওয়া যাবে। শাওয়াফিদের কাছে প্রথম মতটিই বেশি গ্রহণযোগ্য। [হানাফিদের মতে কোন নামাযের আযান ওয়াক্তের আগে দেওয়া যাবে না, এমনকি ফজরের আযানও ওয়াক্তের আগে সহিহ নয়। ওয়াক্ত আসার পর আবার নতুন করে আজান দিতে হবে। কেননা রাসুল সা. বিলাল রা. কে বলেছেন, ফজর প্রশস্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তুমি আযান দিবে না (হেদায়া: ১/৯১-৯২)]

নারী ও হিজড়ার আজান-ইকামতের হুকুম


নারী ও হিজড়া ইকামত দিতে পারবে; কিন্তু আযান দিতে পারবে না। কারণ, তাদের উচ্চ আওয়াজে কথা বলা নিষেধ।

আযান ও ইকামতের জবাব


ইকামত বাংলা উচ্চারণ লেখা আযান-ইকামতের জবাবে হুবহু সে বাক্যগুলোই বলা মুস্তাহাব। তবে (হাইয়া আলাস সালাহ) ও (হাইয়া আলাল ফালাহ) বলার পর শ্রোতা বলবে- লা হাওলা ওয়া লা-কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ। আর (আস সালাতু খাইরুম মিনান নাউম) এর জবাবে বলবে- সাদাকতা ওয়া বারারতা। কেউ কেউ বলেছেন, (আস সালাতু খাইরুম মিনান নাউম) এর জবাবে বলবে 'সাদাকা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম'। আর ইকামতের সময় (কাদ কামাতিস সালাহ) বলার পর 'আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা' বলবে।
আর (আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ) বলার পর বলবে- "ওয়া আনা আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ" এরপর বলবে-

رَضِيتُ باللهِ رَبَّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ رَّسُولًا

  • উচ্চারণঃ রাযিতু বিল্লাহি রাব্বা ওয়াবিল ইসলামি দিনা, ওয়াবি মুহাম্মাদিন রাসুলা।
  • অর্থঃ আমি আল্লাহ তাআলাকে রব হিসেবে, ইসলামকে দীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসুল হিসেবে মেনে সন্তুষ্ট।

আযানের পরের দোয়া বাংলা অর্থসহ


আযানের জবাব শেষ করে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ শরিফ পড়বে এবং এই দুআটি পড়বে-

اللَّهُمَّ رَبَّ هُذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ ، اتِ مُحَمَّدَانِ الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُمَقَامًا مَّحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ

  • উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ্দাওয়াতিত-তাম্মাহ, ওয়াস-সালাতিল কায়িমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাযিলাহ, ওয়াবা আসহু মাকামাম-মাহমুদা নিল্লাযি ওয়াআত্তাহ।
  • অর্থঃ হে আল্লাহ আপনি এই পরিপূর্ণ দাওয়াত তথা আযান ও নামাযের মালিক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওসিলা ও উচ্চমর্যাদা দান করুন এবং তাকে মাকামে মাহমুদে আসীন করুন, যার অঙ্গীকার আপনি তার সাথে করেছেন এরপর নিজের পছন্দমত দুনিয়া ও আখেরাতের যে কোনো বিষয়ে দুঅ করবে।
আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- আযানের সময় মুআযযিন যা বলে তার জবাবে তাই বলবে। আমর বিন আস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আযানের সময় মুআযযিন যা বলে তাই বলবে। এরপর আমার উপন দরুদ পড়বে। 
কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পড়ে, আল্লাহ তায় উপর দশটি রহমত নাযিল করেন। এরপর আমার জন্য ওসিলার দুআ করবে তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন- 'আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা'। অন্য শব্দগুলো হযরত উমর রা. থেকে বর্ণিত পূর্বের হাদিস অনুযায়ী বলতেন।'
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি ইকামতের জবাবে বলতেন-

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآتِهِ سُؤْلَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

  • উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বা হাযিহিদ্দাওয়াতিত-তাম্মাহ, ওয়াস সালাতিল কায়িমাহ, সাল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আতিহি সুওয়ালাহু ইয়াওমাল কিয়ামাহ।
  • অর্থঃ হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ দাওয়াত তথা আযান ও নামাযের মালিক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং কেয়ামতের দিন তার দুআ কবুল করুন।
  • যে সময়গুলোতে আযান ইকামতের জবাব দিবে না
ইকামতের বাক্যগুলো কি কি নামাযে থাকা অবস্থায় আযান ইকামতের জবাব দিবে না। নামায থেকে ফারেগ হওয়ার পর জবাব দেবে। যদি নামাযের ভেতরেই জবাব দেয়, তাহলে মাকরুহ হবে; নামায নষ্ট হবে না। তেমনিভাবে বাথরুমে থাকাবস্থায় জবাব দিবে না। বাথরুম থেকে বের হওয়ার পর জবাব দিবে। 

কুরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ, হাদিস বা অন্য কোনো জ্ঞান চর্চা করাকালে তা বন্ধ করে আযানের জবাব দিয়ে পূর্বের আমলে ফিরে যাবে। কারণ, আযানের জবাব কাযা হয়ে যাবে; কিন্তু ঐগুলো কাযা হবে না। মুআযযিনের সাথে সাথে আযানের জবাব না দিয়ে থাকলে আযান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেবে; বিলম্ব করবে না।

আযানের পরের দুআ


আযানের পর দোয়া কবুল হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- আযান ইকামতের মধ্যকার দুআ ফেরত দেয়া হয় না। আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। ইমাম তিরমিজি রহ. এর বর্ণনায় অতিরিক্ত উল্লেখ আছে- সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা কী দুআ করব? 

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা দুনিয়া-আখেরাতের নিরাপত্তার জন্য দুআ করো। 'হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, মুআযযিনগণ তো আমাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে যাচ্ছেন। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- মুআযযিন যা বলে তোমরাও তাই বলো। জবাব দেয়া শেষ হলে দুআ করো, দুআ কবুল করা হবে।'
হযরত সাহল বিন সাদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- দুই সময়ের দুআ ফেরত দেয়া হয় না। এক. আযানের সময়কার দুআ।

আজান ও ইকামতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস


আযান ও ইকামাতের মধ্যকার সময়ে দু'আ কবুল হয় বলে হাদীসে বর্ণিত।
নিম্নোক্ত দু'আ পড়ার কথাও বর্ণিত হয়েছে।

أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ

  • উচ্চারণঃ আস্সলুল্লা-হাল, 'আ-ফিয়াতা ফিদ্দুন্‌ইয়া ওয়াল আ-খিরাহ্।
  • অর্থঃ আমি আল্লাহর নিকট দুনিয়া এবং আখিরাতের বিপদ হতে মুক্তি চাচ্ছি।
(ইবনে কাইয়্যিম)

ইকামাতের জবাব


ইকামাত দেয়ার সময় মুসল্লীগণ মুয়াযযিনের সাথে সাথে ইকামাতের শব্দগুলো বলবে। রাসূলুল্লাহ আযান ও ইকামাত উভয়কেই আযান বলেছেন।
(বুখারী; মুসলিম; মিশকাত হাঃ ৬৬২: ফিকহুস সুন্নাহ- ১/৮৮ পৃ.; হাইয়াতু কিবারিল ওয়ালা- ১/২৭১ পৃ.)
উল্লেখ্য, قَدْقَاتِ مَتِ الصَّلَاةُ )ক্বাদ কা-মাতিস্ সলা-হ) এর জবাবে أَقَامَهَا اللهُ وَاَدَمَهَا )আ
মাহাল্ল-হু ওয়া আদামাহা-) বলার হাদীসটি য'ঈফ।
অতএব ইকামতের শব্দগুলোর জবাবে মুসল্লিদেরও আজানের অনুরুপে জবাব দিতে হবে।

শেষ কথা


এই হাদিসে আজানের ফজিলত ও তা শুনে বা দেখে মুসলিম সমাজের উপরের প্রত্যেক পরিশ্রম কে সম্মানিত করার গুনাবদ্ধতা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, এই হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে যে, আল্লাহ তার বান্ধার জন্য জান্নাতের প্রস্তর উত্তেজিত করবেন। এর মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই, আযান এবং ইকামতের মূল্যায়ন হিসাবে মুসলিম জীবনে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

আশা করি আজকের আর্টিকেলে আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনি যতটুকু হয়েছেন আপনার মূল্যবান মতামত আপনার নিকটস্থ বন্ধের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন এমন গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওই সেটটি ভিজিট করুন আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url