তাপগতিবিদ্যা অনুধাবনমূলক প্রশ্ন সমূহ

তাপগতিবিদ্যা অনুধাবনমূলক প্রশ্ন সমূহ
তাপগতিবিদ্যা অনুধাবনমূলক প্রশ্ন সমূহ

এনট্রপি পরিবর্তন সর্বদা ধনাত্মক"- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ যেহেতু সকল প্রক্রিয়া অপ্রত্যাগামী সেহেতু অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় এনট্রপি বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ ধনাত্মক হয়। মনে করি, তাপ উৎসের তাপমাত্রা T₁K এবং তাপ গ্রাহকের তাপমাত্রা T₂K। একটি অপ্রত্যাবর্তক ইঞ্জিন T₁ তাপমাত্রায় Q₁ পরিমাণ তাপ শোষণ করে এবং T₂ তাপমাত্রায় Q₂ পরিমাণ তাপ বর্জন করে। তখন ওই ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা, η' = (Q₁ - Q₂) / Q₁
কিন্তু T₁ এবং T₂ তাপমাত্রার মধ্যে কার্যত প্রত্যাবর্তক ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা, η = (T₁ - T₂) / T₁
কার্নোর উপপাদ্য থেকে আমরা জানি, η > η'
অর্থাৎ (T₁ - T₂) / T₁ > (Q₁ - Q₂) / Q₁ ; 1 - T₂/T₁ > 1 - Q₂ / Q₁ T₂/T₁ < Q₂ / Q₁ Q₂/T₂ > Q₁/T₁ Q₂ / Q₁ - Q₂/T₂ > 0
অর্থাৎ অপ্রত্যাবর্তী বা অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় এনট্রপি বৃদ্ধি পায়।
এনট্রপির পরিবর্তন সর্বদা ধনাত্মক হয়।
এস্ট্রপির পরিবর্তন সর্বদা ধনাত্মক"- ব্যাখ্যা কর।


অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়া একটি একমুখী প্রক্রিয়া-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ যে প্রক্রিয়া সম্মুখমুখী হওয়ার পর বিপরীতমুখী হয়ে প্রত্যাবর্তন করতে পারে না, তাকে অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়া বলে। অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় যেহেতু সিস্টেমকে যে পথে যাওয়া হয়েছে, সে পথে আগের বিন্দুতে ফেরত নিয়ে আসা যায় না, তাকেই এটি একটি একমুখী প্রক্রিয়া।

বিশ্বজগৎ ক্রমে ক্রমে তাপীয় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলছে-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ তাপ হলো বিশৃঙ্খল শক্তি। শক্তি যখন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে তখন তাপের উদ্ভব হয়। অর্থাৎ বিশৃঙ্খলিত শক্তিই তাপরূপে প্রকাশ পায়। অপরপক্ষে শক্তি ছাড়াও বিশৃঙ্খলার অস্তিত্ব থাকতে পারে এবং শক্তি সঞ্চয়ের সাথে সাথেই বিশৃঙ্খলা তাপে পরিণত হয়। যেমন- পদার্থের পরমাণুগুলো ইতস্ততভাবে ছড়িয়ে থাকে কিন্তু এ বিশৃঙ্খলা কোনো শক্তি বহন করে না। 

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, তাপ হলো শক্তি ও বিশৃঙ্খলার সমন্বয়। কোনো সিস্টেমের বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেলে তার তাপীয় অবস্থার পরিবর্তন হয়। এ পরিবর্তনকে এনট্রপি নামে অভিহিত একটি গাণিতিক ধারণার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ কোনো সিস্টেমের বিশৃঙ্খলার গাণিতিক প্রকাশকে এনট্রপি বলে। 

মহাবিশ্বের সিস্টেমে বিশৃঙ্খলা বেড়েই চলছে। অতএব, পৃথিবীর এনট্রপি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এনট্রপি বৃদ্ধি পেতে পেতে যখন সর্বোচ্চ মানে পৌঁছাবে তখন সবকিছুর তাপমাত্রা একই হবে, ফলে তাপশক্তিকে আর যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব হবে না। বিজ্ঞানীরা এ অবস্থাকে জগতের তাপীয় মৃত্যু বলে অভিহিত করেছেন।

রুদ্ধতাপীয় প্রসারণ এবং সংকোচনে অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ কোনো গ্যাসকে চারিদিকে তাপ রোধক বস্তু দিয়ে ঘিরে ঐ গ্যাসকে যদি দ্রুত সংকুচিত করা হয়, তাহলে গ্যাসের উপর কিছু কাজ করা হবে। ফলে কিছু তাপ উৎপন্ন হবে। এ উৎপন্ন তাপ ঐ গ্যাসের মধ্যেই থেকে যাবে। এতে গ্যাসের অভ্যন্তরীণ শক্তি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এটিই রুদ্ধতাপীয় সংকোচন। যেমন- সাইকেলের টায়ারে হাওয়া ভরার সময় হাওয়া গরম বোধ হয়, যা রুদ্ধতাপীয় সংকোচনের ফল।

আবার যদি কোনো গ্যাসকে দ্রুত প্রসারিত করা হয় তাহলে গ্যাস তার অভ্যন্তরীণ শক্তির বিনিময়ে নিজেই কিছু কাজ করে ফলে গ্যাসের উষ্ণতা হ্রাস পায়। এটি রুদ্ধতাপীয় প্রসারণ। যেমন- সাইকেলের চাকা হঠাৎ ফেটে গেলে যে বাতাস বের হয় তা ঠাণ্ডা বোধ হয়, যা রুদ্ধতাপীয় প্রসারণের ফল।
যেহেতু রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপের কোনো আদান প্রদান হয় না, তাই dQ = 0
অতএব, তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র হতে পাওয়া যায়, 0 = dU +dW dW = -dU

অর্থাৎ, রুদ্ধতাপীয় প্রসারণে সিস্টেম কর্তৃক সম্পাদিত কাজ সিস্টেমের অন্তঃস্থ শক্তি দ্বারা সম্পাদিত হয় এবং সিস্টেমের অন্তঃস্থ শক্তি হ্রাস পায়। অর্থাৎ সিস্টেম শীতল হয়। আবার রুদ্ধতাপীয় সংকোচনের ক্ষেত্রে বাইরে থেকে শক্তি সরবরাহ করা হয় ফলে সিস্টেমের উপর কাজ করা হয় এবং সিস্টেমের অন্তঃস্থ শক্তি বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ সিস্টেমের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং রুদ্ধতাপীয় সংকোচনে

জগতের এনট্রপি বৃদ্ধি পাচ্ছে- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ মহাবিশ্বের এনট্রপি চরমের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আমরা জানি, অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় এনট্রপি বৃদ্ধি পায় এবং মহাবিশ্বের অধিকাংশ প্রক্রিয়াই অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়া। বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য থাকলে তাপের পরিবহন, বিকিরণ প্রভৃতি অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়াসমূহ অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। ফলে মহাবিশ্বের এনট্রপি ক্রমাগত বেড়েই চলছে।

ধরা যাক, কোনো একটি সিস্টেমে দুটি বস্তু যথাক্রমে T₁ ও T₂ (T₁ > T₂) তাপমাত্রায় আছে। যেহেতু T₁ > T₂, তাই এদের মধ্যে তাপের পরিবহন বা বিকিরণ ঘটবে। T₁ তাপমাত্রার বস্তুটি dQ পরিমাণ তাপ হারালে T₂ তাপমাত্রার বস্তুটি তা গ্রহণ করে। সুতরাং গরম বস্তু কর্তৃক হারানো এন্ট্রপি = dQ/T₁ এবং শীতল বস্তু কর্তৃক গৃহীত এন্ট্রপি = dQ/T₂

সিস্টেমে অর্জিত মোট এন্ট্রপি, dS = dQ/T₂ - dQ/T₁ =dQ(1/T₂-1/T₁)T₁ > T₂ বলে dS একটি ধনাত্মক রাশি। অর্থাৎ পরিবহন বা বিকিরণ প্রক্রিয়ায় এন্ট্রপি বৃদ্ধি পায়। অতএব বলা যায়, জগতের এন্ট্রপি ক্রমাগত বেড়েই চলছে।
এস্ট্রপির পরিবর্তন সর্বদা ধনাত্মক"- ব্যাখ্যা কর।

কার্নোর ইঞ্জিনে দ্বিতীয় ধাপে তাপমাত্রা হ্রাস ঘটে কেন?


উত্তরঃ কার্নোর ইঞ্জিনে দ্বিতীয় ধাপে রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। এক্ষেত্রে প্রসারণের জন্য যে শক্তি প্রয়োজন হয় তা অভ্যন্তরীণ শক্তি হতেই ব্যয় হয়। কেননা, রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় বাইরের সাথে সিস্টেমের কোনো তাপের আদান-প্রদান হয় না। ফলে, সিস্টেমের তাপমাত্রা হ্রাস পায়।

কার্নোর ইঞ্জিনের কার্যনির্বাহক বস্তু পরিবর্তন করলে ঐ ইঞ্জিনের দক্ষতার কোনোরূপ পরিবর্তন হবে না কেন? ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ কার্নো ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতার সমীকরণ হতে জানি, কর্মদক্ষতা, η = (1-T₂/T₁) × 100%
অর্থাৎ, কর্মদক্ষতা নির্ভর করে কেবলমাত্র তাপ গ্রাহকের তাপমাত্রা T₂ এবং তাপ উৎসের তাপমাত্রা T₁ এর উপর। তাই, কার্নো ইঞ্জিনের কার্যনির্বাহক বস্তু পরিবর্তন করলে ঐ ইঞ্জিনের দক্ষতার কোনোরূপ পরিবর্তন হবে না।

'উষ্ণতামিতি পদার্থ হিসাবে পারদ ব্যবহার সুবিধাজনক'-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ তাপমাত্রার পরিবর্তনে পদার্থের যে বিশেষ বিশেষ ধর্ম নিয়মিতভাবে পরিবর্তিত হয় এবং যে ধর্মের পরিবর্তন লক্ষ্য করে সহজে ও সঠিকভাবে তাপমাত্রা নির্ণয় করা যায় তাকে উষ্ণতামিতি ধর্ম এবং ঐ পদার্থকে উষ্ণতামিতিক পদার্থ বলে। পারদ একটি উত্তম উষ্ণতামিতিক পদার্থ, তাপমাত্রা পরিবর্তনে পারদের প্রসারণ এর উপর ভিত্তি করে পারদ থার্মোমিটার তৈরি করা হয়েছে। যখন তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় তখন পারদের সংকোচন বা প্রসারণ ঘটে যা থেকে সহজেই তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায়।

Cp, Cv এর চেয়ে বড় কি? ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন স্থির রেখে উত্তপ্ত করলে চাপ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় কিন্তু বাহ্যিক কাজ সম্পন্ন হয় না। কিন্তু চাপ স্থির রেখে উত্তপ্ত করলে আয়তন ও তাপমাত্রা উভয়ই বাড়ে। ফলে বাহ্যিক কাজ সম্পন্ন হয়। তাই স্থির আয়তনে 1 mol গ্যাসের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করতে যে তাপের প্রয়োজন তা হতে স্থির চাপে ওই গ্যাসের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করতে বেশি তাপের প্রয়োজন হয়। তাই Cp > Cv।

চিত্রে একটি ইঞ্জিনের P-V লেখচিত্র দেখানো হলো-


চিত্রে একটি ইঞ্জিনের P-V লেখচিত্র দেখানো হলো


উদ্দীপকটি যে ইঞ্জিনের লেখচিত্র প্রকাশ করে তা ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ উদ্দীপকটি কার্নো ইঞ্জিনের লেখচিত্রকে প্রকাশ করে। কার্নো ইঞ্জিন এমন একটি ইঞ্জিন যার কর্মদক্ষতা 100%। এটি চারটি স্তরে কাজ সম্পন্ন করে। একটি প্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় কার্যনির্বাহক বস্তু উৎস থেকে তাপ গ্রহণ করে একটি নির্দিষ্ট চাপ, আয়তন এব তাপমাত্রা হতে আরম্ভ করে একটি সমোষ্ণ প্রসারণ ও একটি রুদ্ধতাপীয় প্রসারণ এবং একটি সমোষ্ণ সংকোচন ও একটি রুদ্ধতাপী সংকোচনের মাধ্যমে তাপের কিছু অংশ কাজে রূপান্তরিত করে এবং বাকি অংশ তাপ গ্রাহকে বর্জন করে আদি অবস্থায় ফিরে আসে।

সমোষ্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গ্যাসের আপেক্ষিক তাপ ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ 1 mole গ্যাসের তাপমাত্রা 1 ডিগ্রি বাড়াতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ গ্যাসের আপেক্ষিক তাপ বলে।
C=ΔQ / ηΔΤ
এখন সমোষ্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ΔT = O C =ΔQ/(nxo) = ∞
সমোষ্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গ্যাসের আপেক্ষিক তাপ অসীম।

তাপগতিবিদ্যায় P-V লেখচিত্রের ক্ষেত্রফল কী প্রকাশ করে? ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ তাপগতিবিদ্যার P-V লেখচিত্রের ক্ষেত্রফল একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় কৃতকাজের মানকে নির্দেশ করে।
আমরা জানি, যেকোনো প্রক্রিয়ায়, dW = PdV = W = ∫ PdV
এখানে ∫ PdV যোগজীকরণটি P বনাম V লেখচিত্রের ক্ষেত্রফল নির্দেশ করে। তাই বলা যায় যে, P-V লেখের ক্ষেত্রফল কৃতকাজ নির্দেশ করে।

কোনো তাপগতীয় প্রক্রিয়ায় তাপ সম্পূর্ণরূপে কাজে পরিণত হয়- ব্যাখ্যা কর।

কোনো তাপগতীয় প্রক্রিয়ায় তাপ সম্পূর্ণরূপে কাজে পরিণত হয়- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কোনো তাপগতীয় প্রক্রিয়ায় তাপ সম্পূর্ণরূপে কাজে পরিবর্তিত হলে সেটি সমোফ প্রক্রিয়া হবে। আমরা জানি, যে প্রক্রিয়ায় তাপমাত্রা স্থির থাকে বা অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন হয় না তাকে সমোষ্ণ প্রক্রিয়া বলে।
তাপগতিবিদ্যার সূত্র অনুযায়ী, dQ = dU+ dW
যেখানে dQ হলো গৃহীত তাপ এবং du ও dW হলো যথাক্রমে অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন ও কৃতকাজ।
এখানে, dU = 0 হলে, dQ = dW হয় অর্থাৎ সম্পূর্ণ তাপ কাজে পরিণত হয়।

জগতের তাপীয় মৃত্যুর জন্য দায়ী এনট্রপি ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ সকল স্বতঃস্ফূর্ত পরিবর্তন সর্বদা সাম্যাবস্থার দিকে ধাবিত করে অর্থাৎ স্বতঃস্ফূর্ত পরিবর্তনে এনট্রপি বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীর সকল বস্তুই সাম্যবস্থা পেতে চায়, এজন্য প্রতিনিয়ত পৃথিবীর এনট্রপি বাড়ছে এবং অসীমের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এনট্রপির বৃদ্ধি যখন সর্বোচ্চ মানে পৌঁছাবে তখন সবকিছুর তাপমাত্রা এক হয়ে যাবে। ফলে তাপশক্তিকে আর যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা যাবে না অর্থাৎ জগতের তাপীয় মৃত্যু ঘটবে।

তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রটি শক্তির নিত্যতার একটি বিশেষ রূপ মাত্র- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ যদি তাপ ও কাজের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে পারস্পরিক রূপান্তর সম্ভব হয় তবে কাজ, তাপের সমানুপাতিক। অর্থাৎ, W & Q।
কিন্তু কোনো সিস্টেমে তাপ সরবরাহ করা হলে এর সবটাই কাজে রূপান্তরিত হয় না, এর কিছু অংশ সিস্টেমের অন্তঃস্থ শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যয় হয়। কোনো সিস্টেম Q পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে যদি অন্তঃস্থ শক্তি বৃদ্ধি ∆U এবং সিস্টেম কর্তৃক পরিবেশের উপর সম্পাদিত কাজ W হয় এবং তাপ ও কাজ একই এককে হলে- Q = ∆U + W
সুতরাং, তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র শক্তির নিত্যতার সূত্রের বিশেষ রূপ।

রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেম থেকে তাপ বাইরে যায় না বা বাইরে থেকে তাপ সিস্টেমে প্রবেশ করে না। অর্থাৎ, dQ = 0।
আমরা জানি, এনট্রপি হচ্ছে তাপীয় বিশৃঙ্খলার পরিমাপ এবং কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় এনট্রপির পরিবর্তন, dS = dQ/T। এখানে, dQ = 0 হলে, dS = 0 অর্থাৎ এনট্রপির পরিবর্তন শূন্য, যা নির্দেশ করে প্রক্রিয়াটির আদি ও চূড়ান্ত এনট্রপির পরিমাপ একই। তাই রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে।

দু'টি বরফখণ্ড একটির উপর অপরটি চেপে ধরলে তা একটি খণ্ডে পরিণত হয় কেন?


উত্তরঃ যখন একটি বরফখণ্ড এর উপর আরেকটি বরফখণ্ড রেখে চাপ দেওয়া হয় তখন খণ্ডদ্বয়ের সংযোগস্থলে বরফের গলনাঙ্ক কমে যায় ফলে সংযোগস্থলের বরফ গলে পানির একটি পাতলা স্তর তৈরি করে। চাপমুক্ত হওয়ার পর গলনাঙ্ক আবার 0°C হয়। ফলে মধ্যবর্তী পানির স্তর জমে যায় এবং বরফখণ্ডদ্বয় জোড়া লেগে একটি খণ্ডে পরিণত হয়।

সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় গ্যাস দ্বারা সম্পাদিত কাজ সরবরাহকৃত তাপশক্তির সমান হয়, ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ তাপগতিবিদ্যার সূত্রানুযায়ী: ΔQ = ΔU + ΔW
সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় তাপমাত্রা (T) স্থির থাকে। ফলে ΔT = 0 হয়। আবার, অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন, ΔU = nCvΔT। তাই ΔU = 0 হয়। ফলে ΔQ = ΔW। অর্থাৎ সরবরাহকৃত সম্পূর্ণ তাপশক্তি গ্যাস দ্বারা সম্পাদিত কাজে ব্যয় হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন