বয়স্ক কোয়েল পালনে তাপমাত্রা এর ব্যবস্থা - বয়স্ক কোয়েল পালনে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ

ব্যাটারি বা খাঁচা কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি জানতে ক্লিক করুনবয়স্ক কোয়েল পালনে তাপমাত্রা এর ব্যবস্থা এবং বয়স্ক কোয়েল পালনে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকার আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
বয়স্ক কোয়েল পালনে তাপমাত্রা এর ব্যবস্থা
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করছি বয়স্ক কোয়েল পালনে আলোর ব্যবস্থা এবং বয়স্ক কোয়েল পালনে প্রয়োজনীয় জায়গা। এছাড়া আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিস্তারিত আলোচনা করা হলো সেগুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বয়স্ক কোয়েল পালন


লেয়ার খামারে পূর্ণবয়স্ক মাদী কোয়েলগুলো ষষ্ঠ সপ্তাহ বয়স থেকে ডিম পাড়ার ঘরে লিটার বা খাঁচা পদ্ধতিতে পালন করা যায়। ব্রিডার কোয়েলগুলোকে ব্রিডার কেইজে দেওয়ার পূর্বে মর্দা এবং মাদী আলাদাভাবে পালন করতে হবে। সাধারণত ৭-৮ সপ্তাহ বয়সের বাছাই করা মর্দা কোয়েলগুলো ব্রিডার কেইজে একসাথে রাখা হয়।
এই লক্ষ্যে ৩-৪ সপ্তাহ বয়সে যখন পালকের রঙ দেখে পার্থক্য করা যাবে তখন থেকে ব্রিডার কেইজে দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এদেরকে আলাদাভাবে পালন করতে হবে। তা ছাড়া ব্রিডিং খাঁচায় মর্দা ও মাদী সব সময়ের জন্যই এক সাথে রাখা যাবে না। বরং দরকার মতো সময়ে প্রজনন করানোর জন্য মর্দাকে ব্রিডিং খাঁচায় ঢুকানো হবে এবং নির্দিষ্টকালের পরে আবার পৃথক করে ফেলতে হবে।

১. বয়স্ক কোয়েল পালনে ডিম পাড়ার বাক্স এর ব্যবস্থাঃ

বয়স্ক কোয়েল পালনে ডিম পাড়ার বাক্স এর ব্যবস্থা
লিটার পদ্ধতিতে কোয়েল পালনে একটি অসুবিধা হলো, এরা ডিম পাড়ার পর অনেক সময়ই তা লিটারের ভেতরে লুকিয়ে ফেলে। তা ছাড়া লিটারে পাড়া ডিমে অহরহ-ই ময়লা লেগে যায়। এতে ডিম দেখতে খারাপ লাগে। তাই লিটারে পালিত কোয়েলের ক্ষেত্রে ডিম পাড়ার বাক্সে ডিম পাড়ানোর অভ্যাস করা উচিত। এ লক্ষ্যে লেয়ার্ হাউজে কোয়েলের সংখ্যার অনুপারে ডিম পাড়ার বাসা বা লেয়িং নেস্ট (Laying nest) সরবরাহ করা উচিত। প্রতিটি লেয়িং নেস্ট ১৫ ২০ ২০ ঘন সেমি মাপের হওয়া বাঞ্ছনীয়।

২. বয়স্ক কোয়েল পালনে আলোর ব্যবস্থাঃ

বয়স্ক কোয়েল পালনে আলোর ব্যবস্থা
কোয়েলের ডিম উৎপাদন আলোর ওপর যথেষ্ট নির্ভরশীল। তাই কোয়েল থেকে পর্যাপ্ত ডিম পেতে হলে দৈনিক ১৬ ঘণ্টা আলোর ব্যবস্থা (দিনের আলোসহ) করতে হয়। এই লক্ষ্যে ষষ্ঠ সপ্তাহে ১৩ ঘণ্টা আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। সপ্তম, অষ্টম ও নবম সপ্তাহে সপ্তাহপ্রতি ১ ঘণ্টা হিসেবে বাড়িতে তা যথাক্রমে ১৪, ১৫ ও ১৬ ঘণ্টায় বৃদ্ধি করতে হবে। 
নবম সপ্তাহ থেকে বাকি সময় প্রতিদিন এই ১৬ ঘণ্টা হিসেবেই আলো বরাদ্দ করতে হবে। উল্লেখ্য, একটি ৪০ ওয়াটের বাল্ব দিয়ে ৯ মিটার জায়গা আলোকিত করা যায়। ডিম উৎপাদনে আলোর বর্ণের প্রভাব রয়েছে। যেমন: পর্যাপ্ত ডিম উৎপাদনে লাল বর্ণের আলো নীল বর্ণের থেকে বেশি ভূমিকা রাখে।

৩. বয়স্ক কোয়েল পালনে বায়ু চলাচল ব্যবস্থাঃ


ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল থাকতে হবে। বড়ো খামারের ক্ষেত্রে বায়ু চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘরের দেয়ালে এক্সট্রা পাখা (Exhaust fan) লাগাতে হবে। ঘরের আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে ৫৫- ৬০%।

৪. বয়স্ক কোয়েল পালনে প্রয়োজনীয় জায়গাঃ


লিটার পদ্ধতিতে প্রতিটি পাখির জন্য ২০০-২৫০ বর্গ সেমি জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। তা ছাড়া ঘরের লিটার ১০ সেমি পুরু হওয়া বাঞ্চনীয়। ব্যাটারি পদ্ধতিতে খাঁচা ছোটো হোক বড়ো হোক, একতলা হোক বা ছয়তলা হোক অবশ্যই প্রতিটি কোয়েলের জন্য ১৫০-২০০ বর্গ সেমি জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। উভয় পদ্ধতিতেই ব্রুডার কোয়েলের জন্য কিছুটা বেশি জায়গার প্রয়োজন হবে।

৫. বয়স্ক কোয়েল পালনে খাদ্য ও পানির জায়গাঃ


ব্যাটারি ও লিটার উভয় পদ্ধতিতেই প্রতিটি কোয়েলের জন্য খাদ্য এবং পানির জন্য যথাক্রমে ৩ এবং ২ সেমি জায়গা বরাদ্দ করতে হবে। তাছাড়া বিশেষ নকশার (বা ডিজাইন) খাদ্য ও পানির পাত্র ব্যবহার করতে হবে। এতে খাদ্য এবং পানির অপচয় রোধ হবে।

৬.বয়স্ক কোয়েল পালনে তাপমাত্রা এর ব্যবস্থাঃ

বয়স্ক কোয়েল পালনে তাপমাত্রা এর ব্যবস্থা
বয়স্ক কোয়েলের ঘরের তাপমাত্রা ২১°-২২° সে.-এ (৬৯.৮°-৭১.৬°) স্থির রাখতে হবে। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এরা হিট স্ট্রেসে (Heat stress) ভুগবে। এতে ডিম উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাবে।

৭. বয়স্ক কোয়েল পালনে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশঃ


খামার সবসময় স্বাস্থ্যসম্মত এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। এতে কোয়েল থেকে পর্যাপ্ত উৎপাদন পাওয়া যাবে। ব্যাটারি বা লিটার দুই পদ্ধতিতে পালন করা গেলেও কোয়েলের জন্য ব্যাটারি পদ্ধতিই সহজ, নিরাপদ, টেকসই এবং স্বাস্থ্যসম্মত। তাই এ পদ্ধতিতে খামার করাই লাভজনক। সাফল্যজনকভাবে বয়স্ক কোয়েল পালন করতে হলে খামারিদের নিম্নের বিষয়গুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন