শীতলীকরণ পদ্ধতিতে তরল পদার্থের আপেক্ষিক তাপ নির্ণয়
পরীক্ষার নামঃ শীতলীকরণ পদ্ধতিতে তরল পদার্থের আপেক্ষিক তাপ নির্ণয়
চলে এসেছে এইচএসিস পরীক্ষার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে HSC 25 অনলাইন ব্যাচতত্ত্বঃ তরলের তাপমাত্রা ও এর পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার পার্থক্য খুব বেশি না হলে নিউটনের শীতলীকরণ সূত্রানুসারে, কোনো পদার্থের তাপ হারানোর হার ঐ পদার্থের তাপমাত্রা ও পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার পার্থক্যের সমানুপাতিক।
ধরি,
ক্যালরিমিটারের পানিসম = wg
পরীক্ষণীয় তরলের ভর = mg
একই আয়তনের পানির ভর = m₁ g
তরল পদার্থের আপেক্ষিক তাপ = S cal/g-°C
তরলের তাপমাত্রা 𝚹1°C থেকে 𝚹2°C তাপমাত্রায় নামতে
সময় = t1 S পানির তাপমাত্রা 𝚹1°C থেকে 𝚹2°C তাপমাত্রায় নামতে সময় = t2s
নিউটনের শীতলীকরণ সূত্রানুসারে,
বা, তরল ও ক্যালরিমিটারের তাপ হারানোর হার = পানি ও ক্যালরিমিটারের তাপ হারানোর হার
বা, (w+mS) (𝚹1-𝚹2) / t1= (w+m₁) (𝚹1-𝚹2)/t2
বা, w + mS = (w+m₁) = t1 / t2
S = 1/m [(W+ m₁) t1 / t2.........(1)
চিত্র ১২: নাড়ানিসহ ক্যালরিমিটার
যন্ত্রপাতি
- নাড়ানিসহ একটি ক্যালরিমিটার,
- তাপ নিরোধক কাঠের বাক্স,
- সুবেদী থার্মোমিটার,
- নিক্তি,
- স্টপওয়াচ,
- পরীক্ষণীয় তরল,
- পানি।
কাজের ধারা
১. নাড়ানিসহ (S) ক্যালরিমিটার C-কে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিক্তির সাহায্যে এর ভর নির্ণয় করেছিলাম। ক্যালরিমিটারের মুখ থেকে প্রায় এক-চতুর্থাংশ নীচে ভিতরে দাগ কেটে একে একটি তাপ নিরোধক কাঠের বাক্সের মধ্যে রেখেছিলাম।
২. হিটারের সাহায্যে অন্য একটি পাত্রে তরল প্রায় 75°C পর্যন্ত উত্তপ্ত করে ক্যালরিমিটারের কাটা দাগ পর্যন্ত তরলপূর্ণ করে নাড়ানি দিয়ে নেড়ে দুই মিনিট পর পর থার্মোমিটার T'-এর পাঠ নিয়েছিলাম। অতঃপর তরলসহ ক্যালরিমিটারের ভর নিয়ে তা থেকে ক্যালরিমিটারের ভর বিয়োগ করে তরলের ভর বের করেছিলাম।
৩. এরপর ক্যালরিমিটার খালি করে শুকিয়ে একই প্রক্রিয়ায় ক্যালরিমিটারের দাগ পর্যন্ত পানি নিয়ে থার্মোমিটারের পাঠ নেওয়া হয় এবং পানির ভর নির্ণয় করা হয়।
8. x অক্ষ বরাবর সময় t এবং y অক্ষ বরাবর তাপমাত্রা ও নিয়ে তরল ও পানির জন্য লেখচিত্র অঙ্কন করেছিলাম। এই দুই লেখচিত্র হতে তরল ও পানির তাপমাত্রা 𝚹1°C থেকে 𝚹2°C পর্যন্ত শীতল হতে যে সময় লাগে তা নির্ণয় করেছিলাম।
ছক ১: পানি ও তরলের ভর নির্ণয়
ছক ২: সময়ের সাথে তাপমাত্রা হ্রাস
হিসাব
তরল লেখচিত্রে,
𝚹1= 63°C থেকে 𝚹2 = 50°C পর্যন্ত শীতল হতে সময় t₁ = (8.5-2.5) = 6.0 min = 360 s
পানি লেখচিত্রে,
𝚹1= 63°C থেকে 𝚹2 = 50°C পর্যন্ত শীতল হতে সময় t₂ = (13.5 – 3.8) = 9.7 min = 582 s
S =1/m [(w + m₁)t₁/t₂-W] = 1/ 168.9 [(10.304+211.2)(360) / 582-10.304]
= 0.75 cal/g.°C = 0.75 x 4200 J/kg.K = 3150 J/kg-K
ফলাফল
পরীক্ষণীয় তরল পদার্থের আপেক্ষিক তাপ S = 3150 J/kg-K
ফলাফলের উপর আলোচনা
পরীক্ষায় ব্যবহৃত সুবেদি থার্মোমিটার এবং স্টপওয়াচ সতর্কতার সাথে ব্যবহার করায় ভালো ফলাফল আশা করা যায়। পরীক্ষা চলাকালীন নিম্নোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল করেছিলাম যা ভালো ফলাফলে সহায়তা করে।
- ১. তরল ও পানির তাপমাত্রা 100°C-এর বেশ নীচে রেখেছিলাম।
- ২. ক্যালরিমিটারের মুখে ছিদ্রমুখবিশিষ্ট অপরিবাহী ঢাকনা রেখেছিলাম।
- ৩. অন্য পাত্রে পানি ও তরলকে উত্তপ্ত করেছিলাম।
- ৪. তাপমাত্রা খুব সতর্কতার সাথে মেপেছিলাম।
- ৫. তাপমাত্রা নেওয়ার সময় তরল ও পানি অনবরত নেড়েছিলাম।
প্রশ্ন ও উত্তর
১. প্রঃ আপেক্ষিক তাপের সংজ্ঞা দাও।
উঃ একক ভরের কোনো পদার্থের তাপমাত্রা এক ডিগ্রি বৃদ্ধি করতে যতটুকু তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ পদার্থের আপেক্ষিক তাপ বলে।
২. প্রঃ পানিসম কাকে বলে?
উঃ কোনো বস্তুর তাপমাত্রা এক ডিগ্রি বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয়, সেই তাপ দ্বারা যতটুকু পানির তাপমাত্রা এক ডিগ্রি বৃদ্ধি করা যায় তাকে ঐ বস্তুর পানিসম বলে।
৩. প্রঃ "তামার আপেক্ষিক তাপ 390 J/kg-K"- বলতে কী বোঝ?
উঃ এক কিলোগ্রাম তামার তাপমাত্রা এক কেলভিন বৃদ্ধি করতে 390] তাপশক্তির প্রয়োজন হয়।
৪. প্রঃ ক্যালরি কী? এর সংজ্ঞা দাও।
উঃ CGS পদ্ধতিতে তাপের একক হচ্ছে ক্যালরি (cal)। এক গ্রাম বিশুদ্ধ পানির তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি করতে যতটুকু তাপের প্রয়োজন তাকে এক ক্যালরি বলে।
৬. প্রঃ নিউটনের শীতলীকরণ সূত্র কী?
উঃ কোনো বস্তুর তাপ হারানোর হার, বস্তু ও তার চারপাশের তাপমাত্রার পার্থক্যের সমানুপাতিক।
৭. প্রঃ পরীক্ষায় একই আয়তনের পানি ও তরল নেওয়া হয় কেন?
উঃ তাপ বিকিরণকারী তলের ক্ষেত্রফল উভয় ক্ষেত্রে সমান রাখার জন্য।