জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর কমিউনিকেশন সিস্টেম এন্ড নেটওয়ার্কিং

কমিউনিকেশন সিস্টেম এন্ড নেটওয়ার্কিং অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর কমিউনিকেশন সিস্টেম এন্ড নেটওয়ার্কিং

১। ব্রিজ কী?

উত্তরঃ ব্রিজ হচ্ছে এক ধরনের নেটওয়ার্ক ডিভাইস, যা একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে থাকে।

২। LAN কী?

উত্তরঃ Local Area Network অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট ক্যাম্পাস বা ভবনের একই তলায় অবস্থিত অথবা একই ভবনের কাছাকাছি ফ্লোরের কম্পিউটারগুলোর মধ্যে স্থাপিত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাকে LAN বলে।

৩। ডেটা কমিউনিকেশন মোড কাকে বলে?

উত্তরঃ ডেটা কমিউনিকেশনের সময় প্রেরক থেকে গ্রাহকে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহের দিককে ডেটা কমিউনিকেশন মোড বলে।

৪। সুইচ কী?

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর কমিউনিকেশন সিস্টেম এন্ড নেটওয়ার্কিং
উত্তরঃ সুইচ হলো বহু পোর্টবিশিষ্ট একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস, যার সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রীয়ভাবে যুক্ত থাকে। সুইচ প্রেরক থেকে প্রাপ্ত ডেটা সুনির্দিষ্ট পোর্টে পাঠিয়ে থাকে।

৫। হটস্পট কী?

উত্তরঃ হটস্পট হলো এক ধরনের কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস পয়েন্ট, যা ল্যাপটপ, পিডিএ, নোটবুক, স্মার্টফোন, কম্পিউটার ইত্যাদিতে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে।
CQ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর

১। কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এর উদ্দেশ্যসমূহ ব্যাখ্যা কর।

কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এর উদ্দেশ্যসমূহ
উত্তরঃ কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এর মূল উদ্দেশ্যই হলো কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে তথ্য এবং রিসোর্সসমূহকে ব্যাপক সংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে সহজলভ্য করা। রিসোর্স শেয়ার বলতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে বোঝায়- 
ইনফরমেশন রিসোর্স শেয়ারঃ একই কোম্পানির বিভিন্ন শাখা থেকে শুরু করে সারা পৃথিবীর সকলের জন্য তথ্যকে ব্যবহার উপযোগী করা।
সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ারঃ একে নেটওয়ার্কভুক্ত একাধিক কম্পিউটার নির্দিষ্ট সফটওয়্যার একবার ক্রয় করেই নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারে।
হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ারঃ সফটওয়‍্যার এর মত হার্ডওয়্যার ও (যেমন প্রিন্টার) একটি নেটওয়ার্কভুক্ত সকল কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে।

২। ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সার্ভিস মডেল ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ একটি ডিভাইস দ্বারা ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সুবিধাসম্পন্ন কম্পিউটার ভাড়া করে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ ও যথেচ্ছ উক্ত কম্পিউটারটি ব্যবহার করাই হলো ক্লাউড কম্পিউটিং। এর সার্ভিস মডেল ৩টি। সেগুলো হলো-

অবকাঠামোগত সেবা (laas: Infrastructure as a service): এক্ষেত্রে কম্পিউটার এর অবকাঠামো বা মেশিন ভাড়া দেয়া হয়। ব্যবহারকারী পছন্দমতো অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে নিজের নিয়ন্ত্রণে অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার চালাতে পারে।
প্ল্যাটফর্মভিত্তিক সেবা (PaaS: Platform as a service): এক্ষেত্রে ভার্চুয়াল মেশিনের পরিবর্তে কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম তথা অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ, ওয়েবসার্ভার ইত্যাদি ভাড়া দেয়া হয়। ব্যবহারকারী স্বল্প ব্যয়ে তার অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যার উন্নয়ন করতে পারে।
সফটওয়্যারভিত্তিক সেবা (SaaS: Software as a service): সার্ভিসদাতা প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর সিপিইউ বা স্টোরেজে অবস্থান না করিয়ে বা ইন্সটল না করেই ব্যবহার করতে পারে।

৩। "ক্লাউড কম্পিউটারের তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা কম।" ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে নিরাপত্তা তুলনামূলকভাবে কম। ক্লাউড কম্পিউটিং হচ্ছে একটি ইন্টারনেট সেবা যা কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কম্পিউটিং এর চাহিদাকে পূরণ করে। ইহা এমন একটি প্রযুক্তি যা সহজতরভাবে কম সময়ে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন অনলাইন কম্পিউটিং সেবা প্রদান করে থাকে। 
ক্লাউড ব্যবহারের মূল সমস্যা হলো ডেটা, তথ্য অথবা প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশনের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। একবার ক্লাউডে তথ্য পাঠিয়ে দেওয়ার পর তা কোথায় সংরক্ষণ হচ্ছে বা কীভাবে প্রসেস হচ্ছে তা ব্যবহারকারীদের জানার উপায় থাকে না। ক্লাউডে তথ্যের গোপনীয়তা ভঙ্গের সম্ভাবনা থাকে এবং তথ্য পাল্টে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

৪। "বিশেষ কোনো লস ছাড়াই ফাইবার অপটিক ক্যাবলের ভিতর দিয়ে সিগন্যাল দীর্ঘ দূরত্বে নেয়া সম্ভব।"-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ বিশেষ কোনো লস ছাড়াই ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল এর ভিতর দিয়ে সিগন্যাল দীর্ঘ দূরত্বে নেয়া সম্ভব। একইসাথে অসংখ্য ডেটা প্রেরণ করতে সক্ষম। ট্রান্সমিশন লস অত্যন্ত কম (0.2dB per km এরও কম)। প্রেরিত ডেটার নিরাপত্তা রক্ষিত হয়। ফাইবার অপটিক ক্যাবলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় না। এর ফলে এর ওপর চৌম্বকক্ষেত্রও প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। 

তাই অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল তড়িৎ-চৌম্বকীয় প্রভাব (EMI: Electro Magnetic Interference) হতে যুক্ত। ডেটা স্থানান্তরের ওপর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের প্রভাব নেই। ফাইবার অপটিক ক্যাবল পরিবেশে তাপ নির্গমন করে না। ফাইবার অপটিক ক্যাবলে ক্রস-টক (Cross-Talk) এর সমস্যা নেই। অনেক দূরে রিপিটারগুলো স্থাপন করা যায়। বিশেষ কোনো লস ছাড়াই ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল এর ভিতর দিয়ে সিগন্যাল দীর্ঘ দূরত্বে নেয়া সম্ভব।

৫। "ডেটা ব্লক আকারে ট্রান্সমিট হয়”- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ উক্তিটি সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের দিকে ইঙ্গিত করছে। ডেটা ব্লক বা প্যাকেট আকারে ট্রান্সমিট হয়। সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের প্রতি দুটি ব্লকের মাঝখানের সময় বিরতি (যেমন: কয়েক মিনিট বা মাইক্রো বা ন্যানো সেকেন্ড) একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত থাকে। প্রতি ব্লক ডেটার শুরুতে একটি হেডার ইনফরমেশন ফাইল ও শেষে একটি টেইলার ইনফরমেশন সিগন্যাল আকারে পাঠানো হয়।

৬। "৮০২.১৫ প্রযুক্তির সাহায্যে মোবাইল থেকে মোবাইলে ছবি প্রেরণ সম্ভব”-বুঝিয়ে লেখ।


উত্তরঃ ৮০২.১৫ প্রযুক্তিটি হলো ব্লুটুথ প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে মোবাইল থেকে মোবাইলে ডেটা প্রেরণ সম্ভব। ব্লুটুথ হচ্ছে তারবিহীন পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (WPAN) প্রোটোকল যা রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান- প্রদান করে। এর স্ট্যান্ডার্ড IEEE 802.15, রেঞ্জ সাধারণত 3-10 মিটার হয়ে থাকে। বর্তমানে ল্যাপটপ, ট্যাব, পিডিএ, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি ডিভাইসে ব্লুটুথ বিল্ট ইন আকারে থাকে। এর ডেটা ট্রান্সফার রেট প্রায় 1 মেগাবিট/সেকেন্ড বা তারচেয়ে বেশি। ব্লুটুথ ব্যবহার করে বিভিন্ন ডেটা, টেক্সট, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি শেয়ার করা যায়।

৭। রিং টপোলজিতে সবগুলো কম্পিউটারের সাথে সবগুলো কম্পিউটার সংযুক্ত করলে কোন টপোলজি হয়-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ রিং টপোলজিতে সবগুলো কম্পিউটারের সাথে সবগুলো কম্পিউটার সংযুক্ত করলে মেশ টপোলজি হয়। রিং টপোলজিতে প্রতিটি কম্পিউটার ২টি কম্পিউটারের সাথে যুক্ত হয়ে একটি রিং এর মত গঠন তৈরি করে। এতে ডেটা প্রবাহ একমুখী। একটি কম্পিউটার হতে ডেটা প্রেরণ করলে রিং দিয়ে বিভিন্ন কম্পিউটার অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছায়। 

প্রতিটি কম্পিউটারকে পরস্পরের সাথে যুক্ত করে দিলে এরা পরস্পরের সাথে সরাসরি ডেটা আদান প্রদান করতে সক্ষম হবে। যেটা মূলত মেশ টপোলজি। রিং টপোলজিতে । টি ডিভাইস নিজেদের মধ্যে পরপর মোট টি তার দ্বারা যুক্ত থাকে। একে মেশ টপোলজিতে রূপান্তর করতে (-3) টি অতিরিক্ত তার লাগবে।
রিং টপোলজিতে সবগুলো কম্পিউটারের সাথে সবগুলো কম্পিউটার

৮। মেশ টপোলজির নেটওয়ার্ক সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য কেন?


উত্তরঃ মেশ টপোলজির ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের অধীনস্ত প্রত্যেক কম্পিউটার অন্য সব কম্পিউটারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে। এতে প্রতিটি ওয়ার্কস্টেশনের মধ্যে আলাদা আলাদা লিংক বা বাস থাকে। তাই প্রতিটি ওয়ার্কস্টেশন সরাসরি যেকোনো ওয়ার্কস্টেশনের সাথে ডেটা আদান-প্রদান করতে পারে। মেশ টপোলজির নেটওয়ার্ক সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য হবার কারণঃ
  • যেকোনো দুইটি নোডের মধ্যে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সংকেত আদান-প্রদান করা যায়।
  • কোনো কম্পিউটার বা সংযোগ লাইন নষ্ট হয়ে গেলে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না।
  • এতে ডেটা কমিউনিকেশনে অনেক বেশি নিশ্চয়তা থাকে।
  • নেটওয়ার্কের সমস্যা খুব সহজে সমাধান করা যায়।

৯। ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা লেখ।


উত্তরঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা হলো-
  • ১। সার্বক্ষণিক ব্যবহার করা যায়।
  • ২। যেকোনো স্থান হতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য আপলোড এবং ডাউনলোড করা যায়।
  • ৩। নিজস্ব কোনো হার্ডওয়্যার এর প্রয়োজন হয় না।
  • ৪। তথ্য কীভাবে সংরক্ষিত হবে বা প্রসেস হবে তা জানার প্রয়োজন হয় না।
  • ৫। যেকোনো ছোট বড় হার্ডওয়্যারের মধ্য দিয়ে অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।
  • ৬। অপারেটিং খরচ তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
  • ৭। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়‍্যার আপডেট করা হয়ে থাকে।

১০। ভিন্ন প্রোটোকলের নেটওয়ার্ককে যুক্ত করতে কোন ডিভাইস প্রয়োজন? ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ গেটওয়ে (Gateway): ভিন্নধর্মী প্রোটোকলবিশিষ্ট নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য গেটওয়ে ব্যবহৃত হয়। এটি একই ধরনের বা ভিন্ন ভিন্ন প্রোটোকলবিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্কের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদানের সুযোগ করে দেয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন