স্বল্প দূরত্বে বিনা খরচে ডেটা স্থানান্তর"-ব্যাখ্যা কর

কমিউনিকেশন সিস্টেম এন্ড নেটওয়ার্কিং অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
স্বল্প দূরত্বে বিনা খরচে ডেটা স্থানান্তর-ব্যাখ্যা কর

১। নিরাপদ ডেটা সংরক্ষণে ফ্লাউড কম্পিউটিং উত্তম ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ নেটওয়ার্ক সুবিধাসহ কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ডেটা স্টোরেজ সহজে সুবিধামত ও ব্যবহার অনুযায়ী ভাড়া দেয়ার প্রক্রিয়া হল ক্লাউড কম্পিউটিং। ক্লাউড কম্পিউটিং ডেটা সংরক্ষণে অনেক বেশি নিরাপদ। কেন্দ্রীয় সার্ভারের আওতাধীন থাকার কারণে ঝুঁকি কম থাকে। তাছাড়া যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে তথ্যের অ্যাক্সেস সহজে নেয়া সম্ভব হয় না। বরং কম খরচে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ব্যবহার ও আপডেট করার সুযোগ থাকে বলে নিরাপদে তথ্য সংরক্ষণে ক্লাউড কম্পিউটিং উত্তম।

২। মোবাইল ফোনের ডেটা ট্রান্সমিশন মোড ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ মোবাইল ফোনে ডেটা ট্রান্সমিশন মোড হল ফুল ডুপ্লেক্স যাতে একইসাথে উভয়দিক হতে ডেটা আদান প্রদানের ব্যবস্থা থাকে। এক্ষেত্রে যেকোনো প্রান্ত প্রয়োজনে ডেটা প্রেরণ করার সময় গ্রহণ করতে পারে। যার ফলে একইসাথে ডেটা আদান প্রদান চলতে থাকে।
চিত্রে 'ক' যখন 'খ' এর দিকে ডেটা প্রেরণ করবে ঠিক তখন 'খ' ও 'ক' কে ডেটা প্রেরণ করতে পারবে। এভাবে মোবাইল কাজ করে।

৩। কী-বোর্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ব্যান্ডউইডথ বুঝিয়ে লেখ।

কী-বোর্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ব্যান্ডউইডথ বুঝিয়ে লেখ
উত্তরঃ কী বোর্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরে Voice Band ব্যবহৃত হয়।
এই ব্যান্ডের ডেটা গতি 9600 bps পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি সাধারণত টেলিফোনে বেশি ব্যবহার করা হয়। তবে কম্পিউটার ডেটা কমিউনিকেশনে কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কিংবা কার্ড রিডার থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এই ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া টেলিফোন লাইনেও এই ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ কম্পিউটার ও এর Periferal parts এর মাঝে এটি ডাটা স্থানান্তর করে।

৪। ৩য় প্রজন্মের মোবাইলের সাহায্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় বুঝিয়ে লেখ।


উত্তরঃ 3rd Generation এর Mobile এ Internet ব্যবহার করা।
3rd Generation এর Mobile 4 W-CDMA (Wide band Code Division Multiple Access) ব্যবহৃত হয়। W-CDMA পদ্ধতি বর্তমানে UMTS (Universal Mobile Telecommunication System) নামে পরিচিত। তৃতীয় প্রজন্মে উচ্চ গতির ডেটা ট্রান্সফার ও মাল্টিমিডিয়া ডেটা ব্যবহারসহ CDMA GPRS (General Packet Radio Service) স্ট্যান্ডার্ডের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। 
ফলে সর্বাধিক ডেটা ট্রান্সফারের মোবাইল টেকনোলজি DEGE (Enhanced Data rates for GSM Evolution) চালু হয়। এই প্রজন্মেই আধুনিক মোবাইল টেকনোলজি HSPA (High Speed Packet Access) এর বাস্তবায়ন করা হয়।
অর্থাৎ, এটি Internet সংযোগ প্রদানে সক্ষম 3G Mobile এ ইন্টারনেট ব্যবস্থা বেশ উন্নত এর Bandwidth 2 MHz

৫। 9600 bps স্পিডটি ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ bps মানে বিট পার সেকেন্ড (bit/s)। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ ডেটা স্থানান্তরিত হয়। 9600 bps মানে প্রতি সেকেন্ডে কোনো এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে 9600 bps ডেটা স্থানান্তরিত হয়। এই ডেটা স্থানান্তরের স্পিডকে ব্যান্ডউইথও বলা হয়।

৬। ফাইবার অপটিক ক্যাবল ই এম আই (EMI) মুক্ত কেন?

ফাইবার অপটিক ক্যাবল ই এম আই (EMI) মুক্ত কেন
উত্তরঃ ফাইবার অপটিক ক্যাবল হলো ডাই-ইলেকট্রিক পদার্থ দ্বারা তৈরি এক ধরনের পাঁচের তত্ত্ব যাতে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে লাইট সিগন্যাল স্থানান্তরিত হয়। আর এই অপটিক্যাল ফাইবার আলো নিবদ্ধকরণ ও পরিবহনে সক্ষম। অপটিক্যাল ফাইবার ইলেকট্রিক সিগন্যাল এর পরিবর্তে লাইট সিগন্যাল পরিবহন করে বলে এর উপর চৌম্বকক্ষেত্রের কোনো প্রভাব নেই। তাই এটি ইএমআই (EMI মুক্ত)।

৭। সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যয়বহুল কেন?


উত্তরঃ যে পদ্ধতিতে প্রথমে প্রেরক স্টেশনের প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসে ডেটাকে সংরক্ষণ করা হয় এবং ডেটার ক্যারেক্টারসমূহকে ব্লক আকারে ভাগ করে সমান বিরতিতে প্রতিবার একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। প্রেরক স্টেশনে প্রেরকের সাথে একটি প্রাইমারি ডিভাইসের যেমন:- ব্যবহৃত র‍্যাম, ক্যাশ, সিপিইউ ইত্যাদিতে প্রথমেই ডেটাকে সংরক্ষণ করা হয়। আর এগুলো অনেক ব্যয়বহুল বলে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যয়বহুল।

৮। ডাটা চলাচলের দ্রুততম মাধ্যমটির বর্ণনা দাও।


উত্তরঃ ডাটা চলাচলের দ্রুততম মাধ্যমটি হলো ফাইবার অপটিক ক্যাবল। ফাইবার অপটিকের সাধারণত তিনটি অংশ থাকে। যথা:-
  • ১। কোরঃ ভিতরের ডাই ইলেকট্রিক কোর যার ব্যাস ৮ থেকে ১০০ মাইক্রোন।
  • ২। ক্ল্যাডিংঃ কোরকে আবৃত করে থাকা বাইরের ডাই ইলেকট্রিক আবরণটিকে ক্ল্যাডিং বলে।
  • ৩। জ্যাকেটঃ এটি সাধারণত আবরণ হিসেবে কাজ করে।

৯। অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে সময় বেশি লাগার কারণ বুঝিয়ে লিখ।


উত্তরঃ যে ডাটা ট্রান্সমিশন সিস্টেম প্রেরক হতে ডাটা গ্রাহকে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় এবং ক্যারেক্টরসমূহের মধ্যে বিরতি সমান নয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। ডেটাগুলো যেহেতু ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয়। তখন ট্রান্সমিট হবার পর আরেকটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হবার মাঝখানের বিরতি সমান না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রতিটি ক্যারেক্টার এর শুরুতে একটি স্টার্ট বিট এবং একটি বা দুটি স্টপ বিট যোগ করে ডেটা ট্রান্সমিট হয় বলে ট্রান্সমিটকৃত ডাটার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ফলে এ ধরনের ট্রান্সমিশনে সময় বেশি লাগে।

১০। অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যান্ডউইডথ বুঝিয়ে লেখ।


উত্তরঃ একক সেকেন্ডে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যে পরিমাণ ডেটা ট্রান্সফার হয় তাকে অর্থাৎ ডেটা ট্রান্সফারের হারকে ব্যান্ডউইথ বলা হয়। অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যান্ডউইথ হলো 100mbps থেকে 2gbps, অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে 100mbps পরিমাণ ডেটা ট্রান্সফার হয়। এই ডেটা ট্রান্সফারের হারই ব্যান্ডউইথ যাকে Bit Per Second এ হিসাব করা হয়।

১১। "স্বল্প দূরত্বে বিনা খরচে ডেটা স্থানান্তর"-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ স্বল্প দূরত্বে বিনা খরচে শুধুমাত্র ব্লুটুথের মাধ্যমেই ডেটা প্রেরণ করা সম্ভব। ব্লুটুথ হলো স্বল্প দূরত্বের (১০ মিটারের কাছাকাছি) ভেতর বিনা খরচে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য বহুল পরিচিত ওয়‍্যারলেস প্রযুক্তি। এই ব্লুটুথ প্রযুক্তির মাধ্যমে এক ধরনের নেটওয়ার্ক তৈরি হয় যাকে পিকোনেট বলে। বর্তমানে মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ল্যাপটপ, ট্যাব, পিডিএফ, মেডিকেল ডিভাইস এবং বাসাবাড়ির বিনোদনের জন্য এ প্রযুক্তিটি ইন্টারনেট ছাড়াই ব্যবহার করা যাচ্ছে।

১২। ওয়াকি-টকিতে যুগপৎ কথা বলা ও শোনা সম্ভব নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ওয়াকিটকিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ডেটা ট্রান্সমিশনের মোডের অন্তর্ভুক্ত হাফ ডুপ্লেক্স।
এ পদ্ধতিতে উভয় দিক থেকে ডেটা প্রেরণের সুযোগ থাকে তবে একই সময়ে নয়। যেকোনো প্রান্ত একই সময়ে কেবলমাত্র ডেটা প্রেরণ করতে পারে কিন্তু প্রেরণ এবং গ্রহণ একই সাথে সম্ভব নয়।

১৩। 'ডেটা আদান ও প্রদান একই সময়ে সম্ভব'-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ফুল ডুপ্লেক্স পদ্ধতিতে ডেটা আদান ও প্রদান একই সময়ে সম্ভব। এই পদ্ধতিতে যেকোনো প্রান্ত প্রয়োজনে ডেটা প্রেরণ করার সময় ডেটা গ্রহণ অথবা ডেটা গ্রহণের সময় প্রেরণও করতে পারবে।
উদাহারণঃ টেলিফোন, মোবাইল।
ডেটা আদান ও প্রদান একই সময়ে সম্ভব'-ব্যাখ্যা কর।
চিত্র:- ফুল ডুপ্লেক্স
এখানে ক ও খ একই সময়ে উভয়ের কাছে ডেটা প্রেরণ করতে পারবে।

১৪। 'আলোর গতিতে ডেটা প্রেরণ সম্ভব'-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ আলোর গতিতে ডেটা প্রেরণ সম্ভব একমাত্র ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে। ফাইবার অপটিক ক্যাবল হলো কাঁচ বা প্লাস্টিকের দ্বারা তৈরি এক ধরনের ডাই ইলেকট্রিক পদার্থ যা আলো নিবদ্ধকরণ ও পরিবহনে সক্ষম। আর আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন পদ্ধতিতে ডাটা উৎস হতে গন্তব্যে পৌঁছায়। যেহেতু আলোর গতি ইলেকট্রন এর গতির তুলনায় বেশি তাই ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি এবং দ্রুতগতিতে ডাটা প্রেরণ করা যায়।

১৫। "অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলকে নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন বলা হয়"-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ আধুনিক নেটওয়ার্কে ব্যাকবোন ক্যাবল হিসেবে তো বটেই এমনকি সাধারণ নেটওয়ার্কিং ক্যাবলিং সিস্টেম হিসেবে ইদানিং ফাইবার অপটিক অত্যন্ত জনপ্রিয়। কারণ ফাইবার অপটিক ক্যাবল কপার বা অনগন্য ক্যাবলের তুলনায় অনেক বেশি হালকা, পাতলা ও টেকসই। ফলে এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং জটিল ইনস্টলেশন পদ্ধতি সত্ত্বেও নেওয়ার্কের ব্যাকবোন ক্যাবল হিসেবে জনপ্রিয়।

১৬। "ডেটা ট্রান্সমিশনে আলোক রশ্মি পরিবাহী তার উত্তম।"-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ডেটা ট্রান্সমিশনে আলোর রশ্মি পরিবাহী তার হচ্ছে ফাইবার ক্যাবল যাকে নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন বলা হয়। ফাইবার অপটিক ক্যাবল ডাই ইলেকট্রিক অন্তরক পদার্থ দিয়ে তৈরি কাচের তন্তুর মধ্য দিয়ে আলোর গতিতে ডেটা আদান প্রদান করতে পারে। বিপুল পরিমাণে ডেটা পরিবহনে সক্ষম এই ক্যাবল পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেটা আদান প্রদান হয়।

১৭। ডেটা পরিবহনে ফাইবার অপটিক ক্যাবল নিরাপদ কেন?


উত্তরঃ ফাইবার অপটিক ক্যাবল একটি সরু কাচের তন্তু যা সাধারণ ডাই ইলেকট্রিক পদার্থ দ্বারা তৈরি কাচের তত্ত্ব এবং তাদের মধ্যে দিয়ে আলোর গতিতে ডেটা প্রেরণ করা হয়। এটি নিরাপদ কারণঃ
  • ১। এটি ইলেকট্রিক সিগন্যালের পরিবর্তে আলোক সিগন্যাল প্রেরণ করে।
  • ২। দীর্ঘ দুরত্বে ডেটা প্রেরণের ক্ষেত্রে ধাতব মাধ্যমে ইইমআই (EMI) ও এটিনুয়েশন এর কারণে ট্রান্সমিশন হ্রাস পেলেও এর ওপর ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড কিংবা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার প্রভাব নেই।
  • ৩। ডেটা সংরক্ষণে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বেশি।
  • ৪। আকারে ছোট ও ওজন অত্যন্ত কম।

১৮। অপটিক্যাল ফাইবার দ্রুত গতিতে ডেটা আদান-প্রদান করে-বুঝিয়ে বল।


উত্তরঃ অপটিক্যাল ফাইবার হলো একটি সরু কাচের তন্তু যা সাধারণ ডাই ইলেকট্রিক পদার্থ দ্বারা তৈরি। এতে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল এর পরিবর্তে আলোক সিগন্যালের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সমিট হয় এবং পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন এর মাধ্যমে ডেটা উৎস থেকে গন্তব্যে পৌঁছায়। ইলেকট্রিসিটির মতো আলোক সংকেত বাইরে ছড়িয়ে পড়ে না। এতে অপচয় হয় না। আর সিগন্যাল মাঝ বরাবর যায় বলে অনেক দূর পর্যন্ত যায়।
" ব্যর্থ হলে বড়জোর কিছুটা হতাশ হবে, কিন্তু চেষ্টা না করলে হবে-সর্বনাশ।"

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url