হৃদরোগের বিভিন্ন অবস্থায় করণীয় (Measures to be taken in different conditions of Heart Disease)

হৃদরোগের বিভিন্ন অবস্থায় করণীয় (Measures to be taken in different conditions of Heart Disease)


বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রেক্ষিতে মানুষের হৃৎপিণ্ডে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ছাড়াও অন্যান্য কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে।
হৃদরোগের বিভিন্ন অবস্থায় করণীয় (Measures to be taken in different conditions of Heart Disease)
বুকের ব্যথা (Chest Pain)
নানা কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত মানুষের কাছে বুকে ব্যথার অর্থই হচ্ছে কোনো না কোনো ধরনের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া। চিকিৎসকও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আমলে নিয়ে রোগীর কষ্ট উপশমে সচেষ্ট হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, হৃদরোগসংক্রান্ত বুক ব্যথা নয়, ব্যথা ভিন্ন কারণে। নিচে হৃদরোগ বহির্ভূত কয়েকটি সাধারণ বুক ব্যথার নাম ও কারণ উল্লেখ করা হলো।

বুক ব্যথার প্রকারভেদ এবং লক্ষণ/কারণ


১. প্লিউরিসি (Pleurisy)
প্লিউরিসি (Pleurisy)
ভাইরাসের সংক্রমণে ফুসফুসের আবরণে (প্লিউরিটিস) প্রদাহ।
২. নিউমোনিয়া (Pneumonia)
নিউমোনিয়া (Pneumonia)
ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ; প্যুরাল যন্ত্রণা।
৩. পালমোনারি এমবোলিজম (Pulmonary embolism)
পালমোনারি এমবোলিজম (Pulmonary embolism)
শ্রোণিদেশ বা নিম্নাঙ্গের শিরা থেকে জমাট রক্ত ফুসফুসে প্রবেশ; পালমোনারি ইনফার্কশন সৃষ্টি; তীব্র বুক ব্যথা ও কাশি।
৪. কস্টোকড্রাইটিস (Costochondritis)
কস্টোকড্রাইটিস (Costochondritis)
পর্শকা ও বক্ষাস্থির তরুণাস্থির সংযোগস্থলে প্রদাহ; দীর্ঘকালীন বুক ব্যথা।
৫. পশুকার ভাঙ্গন, পেশিটান (Rib fractures, Muscle strain)
পশুকার ভাঙ্গন, পেশিটান (Rib fractures, Muscle strain)
বুকে তীব্র ব্যথা; নড়া-চড়া, কাশি দেয়া কষ্টকর।
৬. স্নায়ুতে চাপ (Nerve compression)
স্নায়ুতে চাপ (Nerve compression)
স্নায়ুমূলে হাড়ের চাপ; বুক উর্ধ্ববাহুতে ব্যথা।
৭. পিত্ত পাথুরি (Gall stones)
পিত্ত পাথুরি (Gall stones)
পিত্তথলিতে পাথর হলে বুক, পিঠ ও উদরের উপরের অংশে ব্যথা।
৮. দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কগ্রস্ত (Anxiety and Panic Attacks)
দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কগ্রস্ত (Anxiety and Panic Attacks)
দুশ্চিন্তা, অবসন্নতা ও আতঙ্কগ্রস্ত হলে কয়েক মিনিট থেকে কয়েকদিন বুকে ব্যথা; ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথা ঝিমঝিম করা, হতবুদ্ধি হওয়া।

কার্ডিওভাস্কুলার রোগ (Cardiovascular disease) বা হৃদরোগ (Heart disease)


হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালির রোগকে কার্ডিওভাস্কুলার রোগ বলা হয়। কার্ডিওভাস্কুলার রোগকে হৃদরোগ-ও বলে। কার্ডিওভাস্কুলার রোগ বা হৃদরোগ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো করোনারি ধমনি রোগ বা করোনারি হৃদরোগ, কার্ডিওমেগালি (cardiomegaly; হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যাওয়া), হার্ট ভালভ রোগ (heart valve disease; এক বা একাধিক হৃদকম্পাটিকা অকার্যকর), কনজেনাইটাল হার্ট ডিজিজ (congenital heart disease; জন্মকালে হৃৎপিণ্ডে বিকলাঙ্গতা), পেরিকার্ডাইটিস (pericarditis; পেরিকার্ডিয়ামের স্ফীতি), কার্ডিওমায়োপ্যাথি (cardiomyopathy; হৃৎপেশির রোগ), রিউম্যাটিক হৃদরোগ (rheumatic heart disease; স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট রিউম্যাটিক জ্বর এর কারণে হৃৎপেশি এবং ভালভ এর রোগ) ইত্যাদি।
কার্ডিওভাস্কুলার রোগ (Cardiovascular disease) বা হৃদরোগ (Heart disease)
কার্ডিওভাস্কুলার রোগের মধ্যে অন্যতম হলো করোনারি হৃদরোগ (coronary heart disease)। হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহকারী করোনারি ধমনির সংকীর্ণতার ফলে হৃৎপেশিতে পুষ্টি এবং অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে করোনারি হৃদরোগ বলে। করোনারি হৃদরোগের অপর নাম ইস্কিমিয়া (ischaemia)। অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেলিওর করোনারি ধমনির অস্বাভাবিকতার কারণে সৃষ্ট করোনারি হৃদরোগ।

কার্ডিওভাস্কুলার রোগ তথা করোনারি হৃদরোগ এর প্রধান কারণ হলো ধমনি সরু হয়ে যাওয়া। ধমনি সরু হয় অ্যাথারোস্ক্লেরোসিস (atherosclerosis) দ্বারা। অধিক কোলেস্টেরল সম্পন্ন হলুদ ফ্যাটি এসিড ক্যারোটিড ধমনির এন্ডোথেলিয়াম-এর গাত্রে জমা হয়ে অ্যাথারোস্ক্লেরোসিস এর শুরু হয়। পরে কোলেস্টেরলে আঁশ যুক্ত হয়ে এবং শক্ত হয়ে প্লাক (plaque) সৃষ্টি করে। প্লাক আকৃতিতে বৃদ্ধি পেয়ে ধমনি গহ্বরকে সরু করে এবং রক্ত চলাচালে বাধা সৃষ্টি করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url