বাংলা ১ম পত্রঃ তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর

বিগত বোর্ড পরীক্ষাসমূহের CQ প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নের নমুনা উত্তর
তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
বাংলা ১ম পত্রঃ তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর

০১। পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনা, পরিকল্পনা, প্রযোজনা ও কর্মপন্থা নির্ধারণে পাঁচ মাস ধরে নিরলসভাবে কাজ করে আয়োজন প্রায় সম্পন্ন করে রেখেছে রতন। বন্ধুদের মিলনমেলা আয়োজন তার জন্য যেমন কষ্টসাধ্য কাজ ছিল, তেমনি এতে স্বপ্নপূরণের আনন্দও ছিল অফুরান। অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো ভাবনা, উত্তেজনা বা উচ্ছ্বাস নেই আজ তার মনে। কারণ অনুষ্ঠানের আগেই তার মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। মা যেন দূর আকাশে মুখ রেখে বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

(গ) উদ্দীপকের রতনের সাথে 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবির মিল কোথায়? যুক্তি দাও।


উত্তরঃ (গ) প্রিয়জন হারানোর দিক দিয়ে উদ্দীপকের রতন ও 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবির মিল রয়েছে। 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির ব্যক্তি জীবনের দুঃখময় ঘটনার ছায়াপাত ঘটেছে। কবির সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের মৃত্যুতে তাঁর জীবনে প্রচণ্ড শূন্যতা নেমে আসে। 

তাঁর ব্যক্তিজীবন ও কাব্য সাধনার ক্ষেত্রে নেমে আসে এক দুঃসহ বিষণ্ণতা। রিক্ততার হাহাকারে কবি মন আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তাই প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির অন্তর জুড়ে বিরাজ করে শীতের করুণ বিদায়ের বেদনা। তাঁর এ বিষাদময় রিক্ততার সুর 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতাটিকেও আচ্ছন্ন করে রেখেছে।

উদ্দীপকের মাঝেও আমরা রতনের প্রিয়জন হারানোর বেদনার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই। উদ্দীপকের রতন পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের জন্য পাঁচমাস ধরে পরিশ্রম করলেও তার মনে কোনো উচ্ছ্বাস নেই। বন্ধুদের মিলনমেলা আয়োজন তার জন্য যেমন কষ্টসাধ্য ছিল তেমনি এতে স্বপ্নপূরণের আনন্দও ছিল অফুরান। অনুষ্ঠানের আগে তার মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন বলে তার মনে বিষাদের সুর। অনুষ্ঠানের আনন্দ তার মনে পৌঁছাতে পারে না। তাই বলা যায়, প্রিয়জন হারানোর বেদনার দিক দিয়ে উদ্দীপকের রতন ও 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির মিল রয়েছে।

(ঘ) "প্রিয়জনের বিয়োগব্যথা আমাদের আনন্দ-আয়োজনের গতি ভিন্ন পথে ধাবিত করতে পারে।"-'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতা ও উদ্দীপকের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ(ঘ) প্রিয়জন হারানোর কষ্টে কবি সুফিয়া কামাল যেমন ছন্দে-সুরে বসন্তের আগমনী রূপকে বর্ণনা করতে পারেন না; সেই একই ঘটনা ঘটেছে উদ্দীপকের রতনের ক্ষেত্রেও। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি এ বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করে। বসন্তে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য কবি মনে আনন্দের শিহরণ জাগাবে এবং তিনি তাকে ভাবে, ছন্দে, সুরে ফুটিয়ে তুলবেন এমনটাই প্রত্যাশিত। 

কিন্তু কবি মন যদি কোনো কারণে শোকাচ্ছন্ন কিংবা বেদনা ভরাতুর থাকে তবে বসন্ত তার সমস্ত সৌন্দর্য সত্ত্বেও কবির অন্তরকে স্পর্শ করতে পারবে না। 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবি সুফিয়া কামালের ক্ষেত্রে আমরা এ বিষয়টিই লক্ষ করি। কবিতায় আমরা দেখি, প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির মন জুড়ে আছে শীতের রিক্ততা ও বিষণ্ণতার ছবি। 

কবির মন দুঃখ ভরাক্রান্ত, তাঁর কণ্ঠ নীরব। শীতের করুণ বিদায়কে তিনি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। তাই বসন্তের আগমন তাঁর মনে কোনো সাড়া জাগাতে পারছেনা। বসন্তের সৌন্দর্য তাঁর কাছে অর্থহীন। তাই তিনি নতুন কবিতা রচনা করে বসন্তকে বরণ করতে কোনো আগ্রহ দেখান না। উদ্দীপকের রতনও প্রিয়জন হারানোর বেদনায় কাতর। 
ফলে পুনর্মিলন অনুষ্ঠান আয়োজন সত্ত্বেও তার মনে কোনো উচ্ছ্বাস নেই। অনুষ্ঠানের আগেই তার মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। প্রিয়জনের বিয়োগব্যথা আমাদের আনন্দ আয়োজনের গতি ভিন্ন পথে ধাবিত করতে পারে। যেমনটি হয়েছে উদ্দীপকের রতনের মাঝে ও 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবির মাঝে। বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ হয়েছে।

০২। রত্নার সন্তানটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন 'অটিস্টিক'। স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর সে গার্মেন্টস-এ কাজ নেয়। রত্নার মা ছেলের দেখাশুনা করে। হঠাৎ একদিন রত্নার বাকশক্তিহীন ছেলেটি কোথাও চলে যায়। পাগলপ্রায় রত্না সবকিছু ছেড়ে তার হারানো ছেলেকে খুঁজে চলেছে।

(গ) উদ্দীপকের সঙ্গে কবিতার ভাবগত সাদৃশ্য তুলে ধর।


উত্তরঃ (গ) উদ্দীপকের সঙ্গে কবিতার ভাবগত সাদৃশ্য হল প্রিয়জন হারানোর বেদনায়। উদ্দীপকে রত্নার সন্তানটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন 'অটিস্টিক'। স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর সে গার্মেন্টস এ কাজ নেয়। তার ছেলের দেখাশুনা করে তার মা। হঠাৎ একদিন রত্নার বাকশক্তিহীন ছেলেটি কোথাও চলে যায়। ছেলেকে হারিয়ে রত্না সবকিছু ছেড়ে তার হারানো ছেলেকে খুঁজে খুঁজে পাগলপ্রায় হয়ে যায়। 

'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায়ও কবির প্রিয়জন হারানোর বেদনা প্রকাশিত হয়েছে। কবির ব্যক্তিজীবনে বেদনার ছায়াপাত নেমে আসে তার স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুতে। তার জীবনে নেমে আসে প্রচণ্ড শূন্যতা। কবিতাটিতে কবির আবেগময় ভাববস্তুর বেদনাঘন বিষণ্ণতার সুর ধ্বনিত হয়েছে। 

শীতের রিক্ততা তাঁর মনে এমনভাবেই স্থাপিত হয়েছে যে বসন্তের আগমন তাঁর মনে কোনো আনন্দের ছোঁয়া দিতে পারেনি। তিনি কোনোভাবেই তাঁর প্রিয়জন হারানোর বেদনাকে ভুলতে পারেননি। কবি যেমন তাঁর কাছের মানুষকে হারিয়ে বেদনার্ত তেমনি উদ্দীপকের রত্নাও তাঁর সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায়। উভয়ের ক্ষেত্রে ভাবগত সাদৃশ্য রয়েছে প্রিয়জন হারানোর বেদনার দিক থেকে।

(ঘ) "প্রিয়জন হারানোর বেদনা কবিতা এবং উদ্দীপকে ভিন্নভাবে উপস্থাপিত।”- তোমার মত দাও।


উত্তরঃ (ঘ) "প্রিয়জন হারানোর বেদনা কবিতা এবং উদ্দীপকে ভিন্নভাবে উপস্থাপিত।"-মন্তব্যটি যথার্থ।
উদ্দীপকের রত্নার সন্তান হারিয়ে গেলেও তার মৃত্যু হয়নি। তবুও রত্না বেদনার্ত। কিন্তু 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবির প্রিয়জন চিরকালের জন্যই তাঁর কাছ থেকে হারিয়ে গিয়েছেন। উদ্দীপকে রত্মার সন্তানটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। 

স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুতে তাকে কাজের জন্য গার্মেন্টস এ যেতে হয়। তাই তার ছেলের দেখাশুনা করে তার মা। হঠাৎ একদিন রত্নার বাকশক্তিহীন ছেলেটি কোথাও চলে যায়। পাগলপ্রায় রত্না সবকিছু ছেড়ে তার হারানো ছেলেকে খুঁজে চলে, কারণ তার মনে আশা যে সে নিশ্চয়ই তার ছেলেকে খুঁজে পাবে। কিন্তু তবুও সে তার ছেলেকে হারিয়ে বেদনার্ত।
'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা স্বামী আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে কবির জীবনে নেমে আসে প্রচণ্ড শূন্যতা। এ বিষণ্ণতাকে শীতের রিক্ততার সাথে তুলনা করা হয়েছে। তাই বসন্তকে তিনি বরণ করে নিতে পারেননি। তাঁর মাঝে বসন্তের পুষ্পসজ্জা নেই। প্রকৃতির সৌন্দর্য মানবমনের অফুরন্ত আনন্দের উৎস হলেও কবিমনকে তা স্পর্শ করতে পারেনি। 

প্রকৃতিতেবসন্ত এলেও কবির মন উদাসীন ও তার অন্তর জুড়ে রয়েছে রিক্ত শীতের করুণ বিদায়ের বেদনা। কবির এ বেদনা প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিবর্তনের সাথে তুলনা করে প্রকাশিত করা হয়েছে। এখানে বেদনা বা শোক প্রকাশের পন্থা উদ্দীপকের চেয়ে আলাদা।
তাই বলা যায় যে, প্রিয়জন হারানোর বেদনা কবিতা এবং উদ্দীপকে ভিন্নভাবে উপস্থাপিত।

০৩। বাঙালি নারীর আত্মজাগরণে যে নারীর অবদান বেশি, তিনি হলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। বিবাহের পর উদার মানসিকতার অধিকারী স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের পরম মমতায় ও সহযোগিতায় এবং নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে উঠেন। আত্মশুদ্ধি ও নিজের জানার জগৎকে পরিশুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে তিনি সাহিত্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। তার সাহিত্য সাধনায় বাঙালি মুসলিম নারী সমাজই মুখ্য হয়ে ওঠেন। সাহিত্য সাধনায় যখন তিনি নিয়োজিত তখন হঠাৎ করে তাঁর প্রাণপ্রিয় স্বামী পরপারে যাত্রা করেন। এতে তিনি মর্মাহত হন। বিষাদপূর্ণ অন্তরে আপন কর্ম সম্পাদনের জন্য কলকাতায় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গালর্স স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে আজ বাঙালি নারী সমাজ মুক্ত-স্বাধীনভাবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করছেন।

(গ) উদ্দীপকের বিষয়বস্তুর সাথে 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার বিষয়বস্তুর সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আলোচনা কর।


উত্তরঃ (গ) উদ্দীপকের বিষয়বস্তুর সাথে 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার বিষয়বস্তুর সাদৃশ্য আছে প্রিয়জন হারানোর শোকে এবং বৈসাদৃশ্য আছে শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার দিক থেকে।
উদ্দীপকে বাঙালি নারীর আত্মজাগরণে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের কথা বলা হয়েছে। স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের পরম সহযোগিতায় এবং নিজের ঐকান্তিক চেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন। 

তিনি যখন সাহিত্য সাধনায় নিয়োজিত, তখন হঠাৎ করেই তাঁর প্রাণপ্রিয় স্বামী পরপারে যাত্রা করেন। এতে তিনি মর্মাহত হন। কিন্তু তিনি তাঁর কাজ থামিয়ে রাখেননি। বিষাদ-পূর্ণ অন্তরে আপন কর্ম সম্পাদনের জন্য তিনি কলকাতায় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

অপরদিকে, 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় সুফিয়া কামাল বিরুদ্ধ পরিবেশে পারিবারিক নানা উত্থান পতনের মধ্যে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন। তাঁর সাহিত্য জীবনের প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা ছিলেন তাঁর স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেন। কিন্তু তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে কবির জীবনে প্রচণ্ড শূন্যতা নেমে আসে। 
এই শোকে তিনি তাঁর সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করতে পারেন না। তাঁর জীবন যেন শীতের বিষণ্ণতায় থমকে গিয়েছিলো। উদ্দীপকে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ক্ষেত্রে বিষণ্ণতা ও মর্মবেদনা থাকলেও তিনি তাঁর কাজ থামিয়ে রাখেননি। বাঙালি নারীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পথ সৃষ্টি করে তিনি সমাজে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।

(ঘ) তুমি কি মনে কর যে উদ্দীপকের স্বামী বিয়োগের হাহাকার এবং 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির অন্তরের হাহাকার একই সূত্রে গাঁথা? পক্ষে বা বিপক্ষে যুক্তি দেখাও।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ (ঘ) আমি মনে করি উদ্দীপকের স্বামী বিয়োগের হাহাকার এবং 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবির অন্তরের হাহাকার একই সূত্রে গাঁথা নয়। ( উদ্দীপকের বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত। বিয়ের পর স্বামীর সহযোগিতায় ও নিজের ঐকান্তিক চেষ্টায় তিনি স্বশিক্ষিত হয়ে উঠেন। 

আত্মশুদ্ধি ও নিজের জানার জগৎকে পরিশুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে তিনি সাহিত্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। হঠাৎ করেই তাঁর প্রাণপ্রিয় স্বামী মৃত্যুবরণ করলে তিনি মর্মাহত হন। কিন্তু থেমে না থেকে বিষাদপূর্ণ অন্তরেই আপন কর্ম সম্পাদনের জন্য তিনি কলকাতায় স্বামীর স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠা করেন সাখাওয়াত মেমারিয়াল গার্লস স্কুল। 

তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাঁর স্বামীর স্মৃতিকে।
অপরদিকে, 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবি সুফিয়া কামাল যেন দুঃখকেই নিজের সঙ্গী করে নিয়েছেন। এ কবিতায় কবির ব্যক্তিজীবনের দুঃখময় ঘটনার ছায়াপাত ঘটেছে। তাঁর সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুতে কবির জীবনে প্রচণ্ড শূন্যতা নেমে আসে। তাঁর ব্যক্তিজীবন ও কাব্য সাধনার নেমে আসে দুঃসহ বেদনা। শীতের রিক্ততা কাটিয়ে বসন্তকে তিনি বরণ করে নিতে পারেননি। 
তাই বসন্ত বন্দনা করে কোনো কবিতাও তিনি রচনা করেননি। সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্পৃহা তাঁর মাঝে অনুপস্থিত। প্রিয়জনকে হারানোর ব্যথায় তিনি এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হারিয়ে ফেলেছিলেন যা উদ্দীপকের রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মাঝে অনুপস্থিত। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপক ও কবিতায় প্রিয়জন হারানোর হাহাকার একই সূত্রে গাঁথা নয়।

০৪। বিষণ্ণ বিরহী বাতাস মনের জানালায় দেয় উঁকি। উন্মনা মন আজ মাধবীর। পড়ন্ত বিকেলে দখিনের বারান্দায় বেদনার রাগিনী ওঠে তার। শোকের পাথার বেয়ে আসে বসন্ত। চৈত্রের খরায় শুকিয়ে গেছে বুক। সেখানে শুধু ধু ধু বালুচর। নেই তাতে জল, আছে কষ্টের হলাহল। শীতের শুক্ষতা মুছে বসন্তের শূন্যতা চেপে ধরেছে তারে। কারণ মাঘের শীতে প্রিয়জন তার গিয়েছে চলে না ফেরার দেশে।

(গ) উদ্দীপকে 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? বিশ্লেষণ কর।


উত্তরঃ (গ) উদ্দীপকে তাহারেই পড়ে মনে কবিতার প্রিয়জন হারানোর বেদনার দিকটি ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপকের মাধবীর মন আজ উন্মনা। বিষণ্ণ বিরহী বাতাস তার মনের জানালায় উঁকি দেয়। তার শোকের পাথার বেয়ে আসে বসন্ত। বুক চৈত্রের খরায় শুকিয়ে গেছে। শীতের শুষ্কতা মুছে বসন্তের শূন্যতা চেপে ধরেছে তাকে। এইসব অনুভূতির কারণ একটি-মাঘের শীতে তার প্রিয়জন তাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে।

অপরদিকে 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় কবি এক গভীর অন্তর্বেদনায় জর্জরিত। বসন্ত-প্রকৃতির অপরূপ রূপ সৌন্দর্য কবিমনে আনন্দের শিহরণ জাগায় না। এই কবিতায় কবির ব্যক্তিজীবনের দুঃখময় ঘটনার ছায়াপাত ঘটেছে। তার সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক তার স্বামীর মৃত্যুতে তার ব্যক্তিজীবনে নেমে আসে এক দুঃসহ বিষণ্ণতা। তাই বসন্ত এলেও উদাসীন কবি মনে রিক্ত শীতের করুণ সুর বাজে। তাই বলা যায়, 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় ফুটে ওঠা প্রিয়জন হারানোর বেদনার বিষয়টি উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।

(ঘ) উদ্দীপকের 'মাধবী' 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবির ব্যক্তি চরিত্রের ছায়াচিত্র।"-উক্তিটি মূল্যায়ন কর।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ (ঘ) "উদ্দীপকের 'মাধবী' 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতার কবির ব্যক্তি চরিত্রের ছায়াচিত্র"- উক্তিটি যথার্থ।

উদ্দীপকে মায়ার বিষণ্ণ বিরহী বাতাস মাধবীর মনের জানালায় উঁকি দেয়। পড়ন্ত বিকেলে দখিনের বারান্দায় বেদনার রাগিনী বেজে ওঠে। তার মন আজ উন্মনা। শোকের পাথার বেয়ে বসন্ত নেমে আসে। চৈত্রের খরায় তার বুক শুকিয়ে গেছে। সেখানে আজ ধু ধু বালুচর। শীতের শুষ্কতা মুছে বসন্তের শূন্যতা চেপে ধরেছে তাকে। 
এ সবকিছুর কারণ একটাই মাঘের শীতে প্রিয়জন তাকে একা করে না ফেরার দেশে চলে গেছে। অপর দিকে তাহারেই পড়ে মনে কবিতার কবির মন উদাস। বসন্তের আগমন তিনি লক্ষ করেননি। প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির মন জুড়ে শীতের রিক্ততার ছবি। তাই কবিভক্তের বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি বসন্তকে বরণ করে নিচ্ছেননা। 

শীতের করুণ বিদায়কে তিনি ভুলতে পারছেন না। তোর কণ্ঠ নীরব। এসব কিছর কারণ একটাই। তোর স্বামী ও প্রেরণা পরুষের আকসিাজ মত্য। ফলে কবির ব্যক্তিজীবনে দুঃখময় ঘটনার ছায়াপাত ঘটেছে। যা আমরা মাধবীর ব্যক্তিজীবনেও লক্ষ করেছি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উদ্দীপকের মাধবী তাহারেই পড়ে মনে কবিতার কবির ব্যক্তি চরিত্রের ছায়াচিত্র।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url