কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব - গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয়

আজ আমরা আলোচনা করব কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব এবং গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় কিভাবে করা যায়। কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব এ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে নিম্নে আর্টিকেলটি পড়ুন।
কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব
এ আটিকেলের আমরা আরো আলোচনা করছি CTR এবং CPC বৃদ্ধির জন্য কাজ করুন এবং গুগল এডসেন্স পেমেন্ট। এছাড়া আরও আলোচনা করছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক এ সম্বন্ধে সেগুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।

গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায়


গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে চাইলে কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি বা উপায় অনুসরণ করতে হবে। আপনি এখানে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে আয় করার কিছু সাধারণ উপায় জানতে পারবেন।
  • ১. মানসম্মত ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করুন
  • ২. কনটেন্টের বিষয়ে মনোযোগ দিন
  • ৩. SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) করুন
  • ৪. বিজ্ঞাপন পজিশনিং সঠিকভাবে করুন
  • ৫. CTR (Click-Through Rate) বাড়াতে কাজ করুন
  • ৬. CPC (Cost-Per-Click) বেশি এমন কনটেন্ট তৈরি করুন
  • ৭. বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করুন
  • ৮. সঠিক ভিজিটর আনতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন
  • ৯. ট্র্যাফিক বাড়ানোর জন্য নির্ভরযোগ্য উৎস ব্যবহার করুন
  • ১০. অ্যাডসেন্স নীতিমালা মেনে চলুন
এই কৌশলগুলো অনুসরণ করে ধৈর্য ধরে কাজ করলে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় বাড়ানো সম্ভব।

গুগলে ব্লগ বা ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরী করতে হয়


গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করতে চাইলে আপনার একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকা প্রয়োজন। সেই ব্লগে নিয়মিত মানসম্মত ও পাঠকবান্ধব কনটেন্ট পোস্ট করতে হবে, যাতে ভিজিটর আকর্ষণ করা যায়। ভিজিটর যত বেশি হবে, আয়ের সম্ভাবনাও তত বেশি হবে। প্রতিদিন নিয়ম মতো দুই থেকে তিনটি করে আর্টিকেল লিখতে হবে যাতে করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে নিয়মিত পোস্ট করতে পারবেন।

কনটেন্টের বিষয় নির্বাচন করুন


কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবেন তা আগে নির্ধারণ করা জরুরি। নিত্যনতুন ও জনপ্রিয় বিষয়ের ওপর কনটেন্ট তৈরি করলে সেগুলি বেশি পাঠক পড়ে। স্বাস্থ্য, টেকনোলজি, ফ্যাশন, রান্না, ট্রাভেল, এবং শিক্ষামূলক বিষয়ের উপর কনটেন্ট তৈরি করলে সাধারণত বেশি ভিজিটর পাওয়া যায়।

গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি এবং অনুমোদন নিন


গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে অ্যাডসেন্সের সাথে সাইন আপ করতে হবে। গুগল আপনার ওয়েবসাইট রিভিউ করার পর অনুমোদন দিলে আপনি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পাওয়ার পর আপনি বিজ্ঞাপন কোড জেনারেট করে আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন জায়গায় রাখতে পারেন। সাধারণত আর্টিকেলের মধ্যে, সাইডবারে, অথবা হেডারে বিজ্ঞাপন রাখা হয় যাতে ভিজিটররা সেগুলি দেখে।

এসইও (SEO) অপটিমাইজেশন করুন


আপনার ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) প্রয়োজন। আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগকে সার্চ ইঞ্জিনে ওপরে রাখতে SEO অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কীওয়ার্ড নির্বাচন এবং অপটিমাইজড কনটেন্ট তৈরি করলে আপনার ওয়েবসাইটে অর্গানিক ট্র্যাফিক বাড়বে, যা বিজ্ঞাপন দেখার সংখ্যা বাড়াবে। 
কনটেন্টে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন, এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন। এতে আপনার ওয়েবসাইটে অর্গানিক ট্র্যাফিক বৃদ্ধি পাবে। অ্যাডসেন্স থেকে আয় বাড়ানোর জন্য আপনাকে নিয়মিতভাবে মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করে পোস্ট করতে হবে। নিয়মিত পোস্ট করলে আপনার ভিজিটর বেড়ে যাবে এবং বিজ্ঞাপন দেখার সম্ভাবনাও বাড়বে।

CTR এবং CPC বৃদ্ধির জন্য কাজ করুন

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব
গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় বৃদ্ধি করতে CTR (Click-Through Rate) এবং CPC (Cost Per Click) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। CTR বাড়াতে ভাল মানের কনটেন্টের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের সঠিক রং ও আকার নির্বাচন করতে হবে। এর ফলে দর্শকরা বেশি ক্লিক করবে এবং আয় বাড়বে। CPC বেশি এমন কীওয়ার্ড ও বিষয়বস্তু নির্বাচন করুন যাতে প্রতিটি ক্লিকের জন্য বেশি আয় হয়। 
উচ্চ CPC-এর জন্য টেকনোলজি, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, এবং আইন সম্পর্কিত বিষয়বস্তু সাধারণত ভালো কাজ করে। সঠিক কনটেন্ট ও বিজ্ঞাপন পজিশনিংয়ের মাধ্যমে আপনি CTR এবং CPC বাড়াতে পারবেন। গুগল অ্যাডসেন্স নীতিমালা মেনে চলুন এবং গুগল অ্যাডসেন্সের নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করুন। 

অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে গুগলের নির্দেশনা মেনে চলুন। এভাবে নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করে এবং গুগল অ্যাডসেন্স সঠিকভাবে ব্যবহার করে আয় করতে পারবেন।

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয়


গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে হলে কিছু কৌশল ও ধৈর্য প্রয়োজন। এখানে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস রয়েছেঃ
একটি ভালো মানের ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকতে হবে যেখানে নিয়মিতভাবে পাঠকবান্ধব এবং প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট পোস্ট করবেন। কনটেন্ট যত মানসম্মত হবে, তত বেশি পাঠক আকৃষ্ট হবে। কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবেন তা নির্ধারণ করুন। 

টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, ফ্যাশন, খাবার, শিক্ষামূলক বিষয়ের ওপর কনটেন্ট সাধারণত বেশি ভিজিটর পায় এবং এসব ক্ষেত্রে অ্যাডসেন্স থেকে বেশি আয় সম্ভব।বিজ্ঞাপনগুলো এমন জায়গায় রাখুন যেখানে দর্শকরা সহজে দেখতে পায়। সাধারণত আর্টিকেলের মধ্যে, সাইডবারে, (footer) বিজ্ঞাপন রাখলে সেগুলি বেশি ক্লিক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গুগল অ্যাডসেন্সের বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন, যেমন টেক্সট, ডিসপ্লে, লিংক ইউনিট ইত্যাদি ব্যবহার করুন। ভিজিটরদের বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখার অভিজ্ঞতা দিলে তারা বেশি ক্লিক করতে আগ্রহী হয়। ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন, এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার কনটেন্ট শেয়ার করুন। এতে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর বেড়ে যাবে এবং অ্যাডসেন্স আয়ও বাড়বে। 
অর্গানিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ট্র্যাফিকের পাশাপাশি আপনি নির্ভরযোগ্য গেস্ট পোস্টিং, ফোরাম মার্কেটিং, এবং ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ট্র্যাফিক বাড়াতে পারেন। তবে ট্র্যাফিক অবশ্যই প্রকৃত দর্শক হতে হবে, নয়তো অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হতে পারে।অ্যাডসেন্স নীতিমালা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। ভুলবশত বিজ্ঞাপন ক্লিক করা, ভুয়া ট্র্যাফিক জেনারেট করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকুন, যাতে আপনার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ না হয়।

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে প্রথমেই আপনাকে একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে নিয়মিতভাবে মানসম্মত ও পাঠক যাতে পরে সেই কনটেন্ট গুলো দিতে হবে, কারণ গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রুভড হতে ভালো মানের ও নির্দিষ্ট পরিমাণ কনটেন্ট থাকা প্রয়োজন।গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে প্রথমে [Google AdSense (https://www.google.com/adsense/start/) ওয়েবসাইটে যান। 

ওয়েবসাইটে গেলে "Sign up now" বোতামে ক্লিক করুন। এরপর আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করুন। যদি গুগল অ্যাকাউন্ট না থাকে, তবে একটি গুগল অ্যাকাউন্ট খুলে নিন। লগইন করার পর আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের URL দিন এবং কনটেন্ট সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করুন। সঠিক URL দিন যাতে গুগল আপনার ওয়েবসাইটটি ভেরিফাই করতে পারে। এবার আপনাকে কন্টাক্ট ইনফরমেশন দিতে হবে, যেখানে আপনার ঠিকানা, দেশ, এবং ফোন নম্বর দিতে হবে। গুগল এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্টটি যাচাই করবে।

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয়

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব
অ্যাডসেন্স থেকে আয় হলে সেটি পাওয়ার জন্য একটি বৈধ পেমেন্ট মেথড সেটআপ করতে হবে। আপনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যোগ করতে পারেন, যা পরে যাচাই করা হবে। গুগল অ্যাডসেন্সের শর্তাবলী ও নীতিমালা (Terms and Conditions) পড়ে গ্রহণ করুন। গুগল আপনার ওয়েবসাইট যাচাই করার জন্য আপনাকে একটি HTML কোড দেবে, যেটি আপনার ওয়েবসাইটের হেডারে যুক্ত করতে হবে। 
এভাবে গুগল আপনার ওয়েবসাইটটি অ্যাডসেন্সের জন্য উপযুক্ত কিনা তা যাচাই করবে। কোড বসানোর পর গুগল আপনার অ্যাপ্লিকেশন পর্যালোচনা করবে। সাধারণত কয়েকদিন সময় লাগে। আপনার ওয়েবসাইট যদি সব মানদণ্ড পূরণ করে, তবে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।

গুগল এডসেন্স পেমেন্ট


গুগল অ্যাডসেন্স পেমেন্ট সিস্টেম বেশ সহজ এবং নির্ভরযোগ্য। গুগল অ্যাডসেন্স পেমেন্ট পাওয়ার জন্য আপনাকে ন্যূনতম $১০০ আয় করতে হবে। একবার এই পরিমাণ অর্জিত হলে গুগল আপনাকে পরবর্তী মাসে পেমেন্ট করবে। অ্যাডসেন্সে আপনার আয়ের পেমেন্টের জন্য পেমেন্ট মেথড নির্বাচন করতে হবে। 

সাধারণত নিচের কয়েকটি পেমেন্ট মেথড পাওয়া যায় (দেশ ভেদে ভিন্ন হতে পারে)
ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার (EFT): আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা দেওয়া হবে।
ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন: কিছু দেশে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে পেমেন্ট পাওয়া যায়।
চেক: কিছু দেশে কাগজের চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট পাওয়া যায়।

যদি ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার (EFT) নির্বাচন করেন, তবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যাচাই করতে হবে। অ্যাডসেন্স আপনাকে একটি ছোট অংক পাঠাবে, যা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে এবং আপনি সেটি অ্যাডসেন্সে জমা দিয়ে যাচাই সম্পন্ন করতে পারবেন। গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ট্যাক্স তথ্য (যেমন TIN বা প্যান নম্বর) দিতে হবে, যা দেশভেদে আলাদা হতে পারে। 

ট্যাক্স তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করলে পেমেন্ট প্রক্রিয়া সহজ হবে। গুগল সাধারণত প্রতি মাসের ২১ তারিখের মধ্যে পেমেন্ট প্রসেস শুরু করে। পেমেন্ট থ্রেশহোল্ড পূরণ করলে আপনি মাসিক পেমেন্ট পাবেন। একবার পেমেন্ট প্রসেস শুরু হলে ৫-১০ কর্মদিবসের মধ্যে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যাবে। 

আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে "Payments" সেকশনে গেলে আপনি প্রতিমাসের আয়ের রিপোর্ট দেখতে পারবেন। এতে আয়ের উৎস, ক্লিক, ইমপ্রেশন, এবং অন্যান্য ডেটা থাকে, যা আপনাকে আয়ের বিশ্লেষণে সহায়ক হবে। কোনো পেমেন্ট সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে গুগল অ্যাডসেন্সের হেল্প সেন্টার বা সাপোর্টের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। 

এছাড়া পেমেন্ট মিসিং বা ডিলে হলে "Payment troubleshooting" গাইড দেখতে পারেন। গুগল অ্যাডসেন্সের পেমেন্ট সিস্টেম বিশ্বস্ত এবং নিয়মিত, তাই এই প্রক্রিয়াগুলি অনুসরণ করলে আপনি সময়মত পেমেন্ট পাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন