তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর

01. ন্যানোটেকনোলজি কী?

উত্তরঃ বিজ্ঞানের যে শাখায় ন্যানোপার্টিকেলস নিয়ে গবেষণা করা হয়, ন্যানোস্কেলে গিয়ে বস্তুর বা পদার্থের গঠন, বৈশিষ্ট্য, আকৃতি- প্রকৃতি পরিবর্তন ও এদের প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়, তাকেই ন্যানোটেকনোলজি বলে।

02. CAD কী?

উত্তরঃ CAD হলো Computer Aided Design!

03. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী?

উত্তরঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অর্থ হচ্ছে অবাস্তব বা কৃত্রিম বাস্তবতা। অর্থাৎ, যেটা আমাদের কাছে বাস্তবতার মতোই মনে হবে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অবাস্তব বা কৃত্রিম, তাই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি।

04. ক্রায়োসার্জারি কী?

উত্তরঃ Cryosurgery বা Cryotherapy হলো Surgery'র কাটাছেঁড়াবিহীন এক অত্যাধুনিক পদ্ধতি, যা অত্যধিক শীতল তাপমাত্রার Cryogenic Agent প্রয়োগের মাধ্যমে অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত কোষকলা ধ্বংসের কাজে ব্যবহৃত হয়।

05. ক্রায়োজেনিক এজেন্ট কী?

উত্তরঃ ক্রয়োসার্জারীতে ব্যবহৃত তরল N₂, Ar, O₂ ও CO₂ ইত্যাদি গ্যাসকে Cryogenic Agent বলে। এদের অতিনিম্ন তাপমাত্রায় Target Cell বা Tissue তে ক্রয়োপ্রোবের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।

06. 'স্মার্ট হোম' কী?

উত্তরঃ স্মার্ট হোম হলো এমন একটি বাসস্থান ব্যবস্থা যেখানে রিমোট কন্ট্রোলিং বা প্রোগ্রামিং ডিভাইসের সাহায্যে যেকোনো স্থান থেকে কোনো বাড়ির সিকিউরিটি কন্ট্রোল সিস্টেম, হিটিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

07. ই-কমার্স কী?

উত্তরঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচালিত যেকোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকেই ই-কমার্স বলা হয়।

08. ক্রায়োপ্রোব কী?

উত্তরঃ যে সূঁচালো নলের সাহায্যে আক্রান্ত স্থানে ক্রায়োজেনিক এজেন্ট প্রবেশ করানো হয়, তাকে ক্রায়োপ্রোব বলে।

09. বায়োমেট্রিক্স কাকে বলে?

উত্তরঃ বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোনো ব্যক্তির দেহের গঠন এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত করা হয়।

10. রোবটিক্স কী?

উত্তরঃ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যা মানুষের নির্দেশনা অনুযায়ী চলে তাকে রোবট বলে। রোবট সংক্রান্ত যাবতীয় জ্ঞানই রোবটিক্স।

11. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী?

উত্তরঃ মানুষের চিন্তাভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে রূপদান করাকে বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

12. হ্যাকিং কী?

উত্তরঃ সাধারণত অনুমতি ব্যতীত কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে কম্পিউটার ব্যবহার করা অথবা কোনো কম্পিউটারকে মোহচ্ছন্ন করে তার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়াকে হ্যাকিং বলে।

13. ভিডিও কনফারেন্সিং কী?

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ একাধিক ভৌগোলিক স্থানে অবস্থান করে টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতির সাহায্যে ভিডিও তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে গড়ে ওঠা যোগাযোগকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে।

14. বায়োইনফরমেটিক্স কী?

উত্তরঃ বায়োইনফরমেটিক্স হলো কম্পিউটার সফটওয়্যার ও পরিসংখ্যান কৌশল ব্যবহার করে জৈব ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে জৈব গবেষণায় ব্যবহৃত একটি উন্নত পদ্ধতি যা জৈব গবেষণার কাজকে ত্বরান্বিত করে।

01. 'বর্তমানে ড্রাইভারবিহীন গাড়িতেও যাতায়াত করা যায়।'- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বর্তমানে ড্রাইভারবিহীন গাড়িতেও যাতায়াত করা যায় বলতে গাড়ি চালাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগকে বোঝানো হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্পষ্ট বাস্তব প্রয়োগ দেখতে পাই আমরা গাড়ির Autodriving এ। ড্রাইভারবিহীন স্বয়ংক্রিয় গাড়িগুলোকে Self Driving Vehicle বলা হয়। মানবহীন গাড়িতে বা Self-Driving Car ও বিমানে Autopilot mode চালানোর জন্য Artificial Intelligence ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া Traffic Management ও Station Maintenance এ Artificial Intelligence ব্যবহার করা হয়।

02. 'আচরণিক ডেটা'-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ Biometrics প্রযুক্তি ব্যক্তি শনাক্তকরণে ব্যক্তির দুধনের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করে: শারীরবৃত্তীয় ডেটা ও আচরণিক ডেটা। Physiological (শারীরবৃত্তীয়) Biometrics: এধরনের বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে-
  • (i) FingerPrint Scan
  • (ii) Vein & Vascular Scanning
  • (iii) Hand Geometry বা Palm Recognition
  • (iv) Iris Scan
  • (v) Retina Scan
  • (vi) Face Recognition
  • (vii) Ear Authentication
  • (viii) DNA Test
Behaviorial (আচরণগত) Biometrics: এধরনের বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে:
  • (i) Signature Verification
  • (ii) Voice Recognition
  • (iii) KeyStroke Verification
  • (iv) Gait Cycle Analysis

03. আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নত দেশ গঠনে অপরিহার্য ব্যাখ্যা কর।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নত দেশ গঠনে অপরিহার্য। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়। তুমি চাষের জন্য ট্রাক্টর, উন্নত জাতের ফসলের বীজ, উন্নত সার ও কীটনাশক ব্যবহার, ফসলের সঠিকভাবে সংরক্ষণ, মৎস্য চাষের বেলায় উন্নত জাতের পোনা, ফিশ ফিড ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। 

তাছাড়া শিল্প ক্ষেত্রে Computer Aided Design (CAD), Product Life-cycle Management (PLM), RFId (Radio Frequency Identification) ইত্যাদি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি সরাসরি ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও Supply Chain Management এবং Optimisation এ ICT নিয়ন্ত্রিত systems এবং software ব্যবহার করা হয়। 

পণ্যের গুণমান ও স্থায়িত্ব নিশ্চিতকল্পে Quality Inspection Process (যেমন: ফেব্রিক পরিদর্শন) এর ক্ষেত্রে আইসিটি ব্যবহার করে তৈরিকৃত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করা হয় যা উন্নত দেশ গঠনে বিশাল ভূমিকা রাখে।

04. "প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা যায়"-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গাঠনিক চিহ্ন ও বৈশিষ্ট্য এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের সুনির্দিষ্ট পরিমাপের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্তকরণে ব্যবহৃত প্রযুক্তিকেই বলা হয় বায়োমেট্রিক্স। মৃতদেহ শনাক্তকরণ, অপরাধী শনাক্তকরণ, পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব শনাক্তকরণ, জাতীয় পরিচয়পত্র, বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার নিবন্ধন, এটিএম ও অনলাইন ব্যাংকিং, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ও উপস্থিতি নির্ণয়, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন লগইন, ই-কমার্স ও স্মার্ট কার্ড ইত্যাদিতে বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা যায়।

05. সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়‍্যারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সম্ভব।-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ মডেলিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ-সংশ্লিষ্ট পরিবেশ তৈরি করে বাস্তবের ন্যায় প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব। এটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সবচেয়ে বাস্তবমুখী ব্যবহার।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হল কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম যেখানে মানুষ বহুমাত্রিক ইন্দ্রীয়গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন বা উপলব্ধি করতে পারে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তব জীবনের মতই একটি কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করা হয়, এর জন্য ব্যবহৃত হয় সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়‍্যার। বিমান চালানো, মোটরগাড়ি, জাহাজ ইত্যাদি চালানোর প্রশিক্ষণের অর্জনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়। 

এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবেশ (যেমন, বিমানের ককপিট ও আকাশ পথ, ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা, সমুদ্র পথের যাত্রা ইত্যাদি) তৈরি করা হয়। এছাড়াও যুদ্ধের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ, মহাকাশ অভিযানের জন্য নভোচারীদের প্রশিক্ষণ কাজে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।

06. "তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দূরবর্তী রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব।" -ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ উক্তিটি দ্বারা টেলিমেডিসিন সেবা বোঝানো হয়েছে।
টেলিমিডিসিনের মূল কথা হলো তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়া। বাংলাদেশে টেলিমিডিসিন কিছুটা নতুন। তবুও ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অনেক অগ্রগতি লাভ করেছে। বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে টেলিকনফারেন্স ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। 

সেই সাথে ই- মেইলে পাঠানো রোগীর পরীক্ষা রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করা হয়। অনলাইন ডেটাবেজ ফাইলে হাজার হাজার রোগীর অবস্থা (History), প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট সংরক্ষণ করে রাখা যায়। সেগুলো থেকে খুব সহজেই বিভিন্ন পরিসংখ্যান তৈরি করে ফেলা যায় এবং সে অনুযায়ী রোগীকে পরামর্শ দেয়া যায়। এছাড়াও চিকিৎসকেরা চাইলে বিভিন্ন বিষয়ে পৃথিবীর যেকোনো দেশে থাকা অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

07. আগামী বিশ্ব হবে ন্যানোটেকনোলজির বিশ্ব।"- ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ আগামী বিশ্ব হবে ন্যানোটেকনোলজির বিশ্ব।
কোনো বস্তুর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় অণু বা পরমাণুগুলোকে ন্যানোপার্টিকেলে পরিবর্তন করার প্রযুক্তিতে ন্যানো প্রযুক্তি বলে। ন্যানোটেকনোলজির অসংখ্য সুবিধার ফলে আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য সকল কিছুতেই ন্যানোটেকনোলজির ছোয়া লাগতে শুরু করেছে। খাদ্যশিল্প, বস্ত্রশিল্প, Cosmetic (প্রসাধন) শিল্প, Household Accessories তৈরিতে, গৃহায়ণ ও নির্মাণে, চিকিৎসাক্ষেত্র ইত্যাদি ক্ষেত্রে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহৃত হয়। 

তাছাড়াও ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল শিল্পে, কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসের হার্ডওয়‍্যার তৈরি করতে, দূষণরোধে ও জীবাণুনাশক হিসেবে, জ্বালানি ক্ষেত্রে, যোগাযোগ ও যাতায়াতে, খেলাধুলার সরঞ্জাম তৈরিতে, সামরিক ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার রয়েছে।

08. "ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যন্ত্রের সাহায্যে করা সম্ভব”-বুঝিয়ে লেখ।


উত্তরঃ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রটি হলো রোবট যা মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
যে সকল কাজ মানুষের জন্য বিপজ্জনক বা প্রায় অসম্ভব সেসব কাজ রোবট দ্বারা নিরাপদ দূরত্বে থেকেই করে ফেলা যায়। যেমন- মাইন ও অন্যান্য বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণে, সমুদ্রের তলদেশে অনুসন্ধান, হারানো জাহাজ খোঁজা, বিষাক্ত ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য বা রেডিও-অ্যাকটিভ পদার্থ ব্যবহার, অগ্নিনির্বাপন ইত্যাদি। 

মহাকাশ গমন (যেমন মঙ্গলপৃষ্ঠে কাজ), নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে, খনির অভ্যন্তরে কাজে মানুষের পরিবর্তে রোবট প্রেরণ করা হয়। ওয়েল্ডিং, নির্মাণ কাজ, তেল ও গ্যাস উত্তোলন, স্টিল ও জাহাজ তৈরি ইত্যাদি ভারি শিল্পে দুর্ঘটনা এড়াতে রোবট ব্যবহার করা হয়।

09. কোন প্রযুক্তিতে সারা বছর আমের ফলন সম্ভব?-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তির সাহায্যে সারাবছর আমের ফলন করানো সম্ভব। বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে কোনো জীবের জিনোমকে (genome) নিজের সুবিধানুযায়ী সাজিয়ে নেয়াকেই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জেনেটিক মডিফিকেশন বলে। জিনোম হলো কোনো জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের তথ্য। 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতিতে কখনো কখনো প্রাণীর বংশ পরম্পরায় প্রাপ্ত ডিএনএ সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে অথবা প্রাণীদেহের বাইরে প্রস্তুতকৃত ডিএনএ প্রাণীদেহে প্রবেশ করানোর মাধ্যমে প্রাণীর জেনেটিক গঠনের পরিবর্তন ঘটানো হয়। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল এর নতুন সমাবেশ তৈরির জন্য Recombinant Nucleic Acid পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। আমের জিনের পরিবর্তন আনার মাধ্যমে নতুন প্রজাতির আম উৎপাদন করা হয়। এসকল আমে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য যেমন, স্বাদ বৃদ্ধি, ঋতুনির্ভরশীলতা থেকে মুক্তি ইত্যাদি অর্জন সম্ভব।

10. 'নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা সম্ভব'-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতিটির নাম হলো ক্রায়োসার্জারি।
ক্রায়োসার্জারি হচ্ছে এক প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক এবং রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস করা হয়।

ক্রায়োসার্জারি কৌশল প্রয়োগ করে চিকিৎসা করাকে ক্রায়োথেরাপি বলে। ক্রায়োথেরাপিতে টিউমার টিস্যুর তাপমাত্রা ১২ সেকেন্ডের ভিতরে কমিয়ে - 120 deg * C থেকে - 165 deg * C তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়। এই সময় ক্রায়োপ্রোব বা একটি সুঁচের প্রান্ত দ্বারা টিউমার টিস্যুর ভিতরে খুব দ্রুত তরল আর্গন গ্যাসের নিঃসরণ করানো হয়। 

তাপমাত্রার অত্যধিক হ্রাসের ফলে কোষের পানি জমাটবদ্ধ হয়ে ঐ টিস্যুটি একটি বরফপিণ্ডে পরিণত হয়। বরফপিণ্ডের ভেতরে টিউমার টিস্যুটি আটকা পড়ে গেলে এতে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কারণ - 165 deg * C তাপমাত্রায় রক্ত ও অক্সিজেন পরিবহন সম্ভব নয়। এর ফলে জমাটবদ্ধ অবস্থায় টিউমারের ক্ষয় সাধিত হয়। আবার ক্রায়োপ্রোব বা সুঁচের প্রান্ত দিয়ে টিউমার টিস্যুটির ভিতরে হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে টিস্যুটির তাপমাত্রা 20 deg C থেকে 40 deg  C এ উঠানো হয়। তখন জমাটবদ্ধ টিউমার টিস্যুটির বরফ গলে যায় এবং টিস্যুটি ধ্বংস হয়ে যায়।

11. আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের পদ্ধতি বুঝিয়ে লেখ।


উত্তরঃ বায়োমেট্রিক্সের দ্বারা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা সম্ভব।
এক্ষেত্রে ভয়েস রিকগনিশন, সিগনেচার ভেরিফিকেশন ও টাইপিং কী স্ট্রোকের ভিত্তিতে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা হয়। প্রতিটি ব্যক্তির আচরণগত এসব বৈশিষ্ট্য অনন্য। যার কারণে একজনের প্রাপ্ত এসব ডাটা দ্বারা শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিকেই পাওয়া যায়। এসব আচরণগত তথ্য একসাথে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে সেই ব্যক্তির দেওয়া আচরণগত তথ্য থেকেই শুধুমাত্র সে অ্যাকসেস করতে পারে।

12. প্রযুক্তির ব্যবহারে মটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব- কথাটি ব্যাখ্যা কর।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটির মাধ্যমে ঘরে বসেই মটর ড্রাইভিং শেখা সম্ভব। ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটি বা VR হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম যাতে মডেলিং (Modelling) ও অনুকরণবিদ্যার (Simulation) প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম বহুমাত্রিক ইন্দ্রিয় গ্রাহ্যপরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন বা উপলব্ধি করতে পারে ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটিতে অনুকরণকৃত পরিবেশ হুবহু বাস্তব পৃথিবীর মত হতে পারে। এক্ষেত্রে অনেক সময় ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। অর্থাৎ VR এর মাধ্যমে মটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব।

13. ন্যূনতম সকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি হল ক্রায়োসার্জারি। ক্রায়োসার্জারি হচ্ছে এক প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক এবং রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস করা হয়।

ক্রায়োসার্জারি কৌশল প্রয়োগ করে চিকিৎসা করাকে ক্রায়োথেরাপি বলে। ক্রায়োথেরাপিতে টিউমার টিস্যুর তাপমাত্রা ১২ সেকেন্ডের ভিতরে কমিয়ে -120°C থেকে-165°C তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়। এই সময় ক্রায়োপ্রোব বা একটি সূঁচের প্রান্ত দ্বারা টিউমার টিস্যুর ভিতরে খুব দ্রুত তরল আর্গন গ্যাসের নিঃসরণ করানো হয়। 

তাপমাত্রার অত্যধিক হ্রাসের ফলে কোষের পানি জমাটবদ্ধ হয়ে ঐ টিস্যুটি একটি বরফপিণ্ডে পরিণত হয়। বরফপিণ্ডের ভেতরে টিউমার টিস্যুটি আটকা পড়ে গেলে এতে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কারণ-165° C তাপমাত্রায় রক্ত ও অক্সিজেন পরিবহন সম্ভব নয়। এর ফলে জমাটবদ্ধ অবস্থায় টিউমার ক্ষয় সাধিত হয়। 

আবার ক্রায়োপ্রোব বা সূচের প্রান্ত দিয়ে টিউমার টিস্যুটির ভিতরে হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে টিস্যুটির তাপমাত্রা 20°C থেকে 40° C এ উঠানো হয়। তখন জমাটবদ্ধ টিউমার টিস্যুটির বরফ গলে যায় এবং টিস্যুটি ধ্বংস হয়ে যায়।

14. তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ গ্লোবাল ভিলেজ হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ আমরা তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর জীবনযাপন করা শুরু করলে সমগ্র বিশ্ব আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে তথা আমরা বিশ্ব গ্রামে বসবাস করতে পারবো। তাই বলা যায় তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম।

15. ঘরের মধ্যেই ড্রাইভিং শেখা সম্ভব-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটির মাধ্যমে ঘরে বসেই ড্রাইভিং শেখা সম্ভব। ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটি বা VR হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম যাতে মডেলিং (Modelling) ও অনুকরণবিদ্যার (Simulation) প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম বহুমাত্রিক ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন বা উপলব্ধি করতে পারে ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটিতে অনুকরণকৃত পরিবেশ হুবহু বাস্তব পৃথিবীর মত হতে পারে। এক্ষেত্রে অনেক সময় ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ফলে ঘরে বসেই অনুকরণকৃত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে ড্রাইভিং শেখা সম্ভব।

16. বায়োইনফরম্যাটিক্স-এ ব্যবহৃত ডেটা কী? ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ বায়োইনফরমেটিক্স এ ব্যবহৃত ডেটা বলতে বোঝায় কম্পিউটার সফটওয়‍্যার ও পরিসংখ্যান কৌশল ব্যবহার করে জৈব রাসায়নিক বিশ্লেষণ। কম্পিউটার ও পরিসংখ্যান কৌশল ব্যবহার করে জৈব তথ্য বিশ্লেষণ করার প্রক্রিয়া তথা কম্পিউটার ডেটাবেজ ও অ্যালগরিদম ব্যবহার করে জৈব গবেষণার কার্যক্রম পরিচালনা হল বায়োইনফরমেটিক্স। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত ডেটা হল জৈব তথ্য, কৃষিক্ষেত্রে মাটির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাবলি ইত্যাদি।

17. কৃত্রিম বুদ্ধিমাত্তা এক ধরনের এক্সপার্ট সিস্টেম-বুঝিয়ে লেখ।


উত্তরঃ কম্পিউটারকে কৃত্রিম উপায়ে সমস্যা সমাধান ও জটিল পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ার সক্ষমতা প্রদান বা তার রূপদানকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। এক্সপার্ট সিস্টেম এরই একটি প্রয়োগ।

এটি একটি কম্পিউটার সিস্টেম যা মানুষের চিন্তা ভাবনার দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাকে একত্র করে ধারণ করে। এই সিস্টেমে কম্পিউটারকে বিশাল তথ্য ভাণ্ডার দিয়ে সমৃদ্ধ করা হয় যাকে আনভাণ্ডার বলা হয়। আনভাণ্ডারে যেকোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর প্রশ্ন করে উত্তর জেনে নেওয়া যায়। এজন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অনেকগুলো মাইক্রোপ্রসেসর ও চিপ ব্যবহার করে প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করা হয় যা ইনফারেন্স ইঞ্জিন (Inference Engine) নামে পরিচিত। অর্থাৎ, Expert System Artifical Intelligence এর একটি অংশ। অন্য কথায় বলা যায়, AI এক ধরনের Expert System।

18. আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি হলো ন্যানো টেকনোলজি।
যখন কোনো একটি বস্তুর কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যে বিশেষ প্রযুক্তি বা যন্ত্র ব্যবহার করে অণু বা পরমাণুগুলোকে ন্যানো মিটার ছেলে বা ন্যানো পার্টিকেল রূপে পরিবর্তন করা হয় তখন সেই প্রযুক্তিকে ন্যানো টেকনোলজি বলে। ন্যানো টেকনোলজির ক্ষেত্রে দুটি প্রক্রিয়া আছে:-
(i) Bottom Up: এ পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারে ছোট জিনিস দিয়ে বড় কোনো জিনিস তৈরি করা হয়।
(ii) Top Down: এ পদ্ধতিতে কোনো জিনিসকে কেঁটে ছোট করে, তাকে নির্দিষ্ট আকার দেয়া হয়।

19. তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক-বুঝিয়ে লেখ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
উত্তরঃ তথ্য প্রযুক্তি হলো যেকোনো কম্পিউটার, ডেটাবেজ, নেটওয়ার্কিং, ভৌত যন্ত্রাংশ, অবকাঠামো ইত্যাদির প্রয়োগ যার সাহায্যে যেকোনো গঠনের ইলেকট্রনিক ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। আর যোগাযোগ ব্যবস্থার নকশা এবং নিমার্ণ কার্যকলাপ বজায় রাখাই হলো যোগাযোগ প্রযুক্তি। অর্থাৎ প্রয়োজনের সময় সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা-ই তথ্য প্রযুক্তির কাজ। আর তাথ্যের এই আদান-প্রদান হয় যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে। তাই তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একে অপরের পরিপূরক।

20. বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব।
স্পর্শ, শোনা কিংবা দেখা থেকে মানুষের মস্তিষ্কে একটি অনুভূতির সৃষ্টি হয়ে থাকে যাকে আমরা বাস্তবতা বলে থাকি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে কতগুলো যন্ত্রের সাহায্যে এমন একটি কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি সম্ভব যেখানে মানুষ বাস্তবের ন্যায় অনুভূতি পায়। ফলে মানুষ চাঁদে না গিয়েও এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে চাঁদে হাঁটার অনুভূতি লাভ করতে পারে। এভাবে বাস্তব অবস্থান করেও মানুষ তার কল্পনাকে ছুঁতে পারে।

21. পযন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে"-ব্যাখ্যা কর।


উত্তরঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। কোনো যন্ত্র সম্ভাব্য সকল পরিস্থিতিতে কীভাবে কাজ করবে তা নির্দেশনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে যন্ত্রকে শেখানো হয়। ফলে মানুষের সাহায্য ছাড়াই যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন