ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী
ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী এবং ইংরেজি শেখার সহজ-সরল কিছু উপায় এ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে নিম্নে আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
এই আর্টিকেলে আমরা আরো আলোচনা করছি ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ইংরেজি শিক্ষা এবংফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য ইংরেজি শেখার গুরুত্ব। এছাড়া আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিকের সমন্ধে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হলো সেইগুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য ইংরেজি শেখার গুরুত্ব
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের বেশির ভাগ কাস্টমার হচ্ছেন ভিনদেশি, তারা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষা ব্যবহার করেন ইংরেজি। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ না পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বড়ো একটি বাঁধা ইংরেজিতে যোগাযোগ দক্ষতার অভাব। ইংরেজি ভালোভাবে না জানার কারণে দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত কাজটি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে অনেকের। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মতো প্রতিযোগিতাপূর্ণ পেশায় টিকে থাকতে হলে ইংরেজি জানা আবশ্যক।
যোগাযোগের ক্ষেত্র ছাড়া যেসব কারণে একজন ফ্রিল্যান্সারের ইংরেজি জানা প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে, ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে, কভার লেটার, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি। বিশেষ করে, কভার লেটার যেকোনো কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিডিং করার সময় কভার লেটার দিতে হয়। একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং একই সাথে আকর্ষণীয় কভার লেটার আপনার কাজটি পাওয়ার পথকে সহজ করে দিতে পারে। আর এই কভারলেটারগুলোর সবকিছুই ইংরেজিতে লিখতে হয়।
ইংরেজি শেখার সহজ-সরল কিছু উপায়
ইংরেজি শেখার প্রধান বিষয় হলো নিয়মিত অনুশীলন, একে ঘিরে থাকা। ছোটো বাচ্চারা অভিধান এবং পাঠ ছাড়াই তাদের স্থানীয় ভাষায় যোগাযোগ করতে শেখে। একইভাবে, কার্যকর শেখার জন্য, আপনাকে সত্যি সত্যিই এই ভাষা দিয়ে নিজেকে ঘিরে রাখতে হবে। শিশুরা স্পঞ্জের মতো জ্ঞান শোষণ করে, ইংরেজি শেখার জন্য আপনাকেও তাই করতে হবে। এখানে কিছু প্রাকটিক্যাল টিপসঃ
১. যদি বাংলায় থাকে তা হলে আপনার মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিভাইসের ইন্টারফেসের ভাষা এখনই ইংরেজিতে পরিবর্তন করুন। এইভাবে আপনি কিছু নতুন শব্দ এবং অভিব্যক্তি শিখবেন এবং ইংরেজি পাঠ্যের সাথে যোগাযোগ করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন।
আরো পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায়
২. বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্রের সাথে সেগুলোর ইংরেজি নামের স্টিকার লাগান। আপনি অবাক হবেন আপনার বাসায় বা অ্যাপার্টমেন্টে কতগুলো বস্তু রয়েছে যার নামও হয়তো আপনি বাংলায়ও ভালো মতো জানেন না, ফলে ইংরেজিতে এই নামগুলো আপনি তাড়াতাড়ি রপ্ত করতে পারবেন। ঘরের দরজা, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, ক্যাবিনেট এবং এমনকি খাদ্যশস্যের বাক্সেও নাম লাগান।
৩. আপনি যখন একটি অপরিচিত শব্দের অনুবাদ খোঁজেন, তখন এটি শুধুমাত্র একটি অভিধানে দেখে ক্ষান্ত হবেন না, Google চিত্র অনুসন্ধানেও এটি সন্ধান করুন। প্রায়শই চিত্রগুলো পাঠ্য বর্ণনার চেয়ে একটি শব্দের অর্থ সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দেয়।
৪. যেহেতু আমরা দিনের বেশিরভাগ সময় ফোনে কাটাই, তাই আপনার স্মার্টফোনে এমন অ্যাপ ইনস্টল করুন যা আপনাকে প্রতিদিন কয়েকটি শব্দ শেখাবে। ১০-২০ মিনিট করে প্রতি ৩-৪ ঘণ্টা পরপর এই অ্যাপে সময় কাটান।
৫. আপনি যদি ইতোমধ্যে ইংরেজি পাঠ্যটি যথেষ্ট ভালোভাবে বুঝতে পারেন, তা হলে ইংরেজি টু বাংলা অভিধানের পরিবর্তে একটি ইংরেজি টু ইংরেজি অভিধান ব্যবহার করুন।
৬. YouTube-এ ইংরেজি ভাষার টিভি শোগুলোর রেকর্ডিং দেখুন। তারা সংক্ষিপ্ত এবং মজার। যেমন: কোনান ও'ব্রায়েন বা স্টিফেন কোলবার্টের টক্-শোগুলো। এগুলো দারুণ উপকারী।
কোনান ও'ব্রায়েনঃ
https://www.youtube.com/c/TeamCoco
স্টিফেন কোলবার্টেরঃ
https://www.youtube.com/c/ColbertLateShow
৭. অনুবাদের কাজ করুন। ছোট্ট একটি ইংরেজি গল্প বা নিউজ বাংলায় অথবা বাংলা একটি ছোট্ট কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করুন ডিকশনারি থেকে ইংরেজি শব্দ চয়ন করে করে। এই পদ্ধতি আমার ইংরেজি শেখার জন্য অনেক কাজে দিয়েছিল।
৮. TED-এর মতো কনফারেন্সের রেকর্ডিংয়ের জন্য ইউটিউবে সার্চ করুন। বক্তারা সাধারণত স্পষ্টভাবে কথা বলেন, একটি প্রাণবন্ত ভাষা দিয়ে। এতে শুধুমাত্র আপনার ভাষা উন্নত হবে না, কিন্তু নতুন কিছু শিখতেও পারবেন।
৯. আমেরিকান ইংরেজি, ব্রিটিশ ইংরেজি এবং টিভি শো বা টিভি সিরিজ থেকে ইংরেজি শেখার মতো আর কিছু হতে পারে না। বলতে পারেন আমি মূলত এগুলো থেকেই শিখেছি।
১০. দীর্ঘ পর্বের জন্য সময় নেই? গাড়িতে, রিকশায় ট্রাফিক জামে, বাসে, কর্মক্ষেত্রে বিরতির সময় বা প্রতিদিনের ক্রিয়াকলাপের মধ্যে, আপনি একটি শর্ট ফিল্ম স্ট্রিমিং দেখতে পারেন, কানে হেডফোন লাগিয়ে অবশ্যই।
১১. আপনি হাস্যরস পছন্দ করেন? ইংরেজিভাষী স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ানদের দেখুন। কৌতুকাভিনেতারা বৈচিত্র্যময় কথা বলেন এবং অনেক মজার মজার ও নির্দিষ্ট অনেক শব্দ ব্যবহার করেন যা আপনি পাঠ্যপুস্তকে পাবেন না।
১২. আপনি যদি ইংরেজিতে একদম নতুন হন তবে ছোট বাচ্চাদের জন্য লেখা বই পড়ুন। এগুলো সংক্ষিপ্ত এবং সহজ ভাষায় সাজানো। ক্লাসিক উইনি-দ্য-পুহ, হোয়্যার দ্য ওয়াইল্ড থিংস আর এবং দ্য ক্যাট ইন দ্য হ্যাট খুব ভালো হবে।
১৩. ইংরেজি ভাষার কমিক্স পড়ুন। ব্যাটম্যান, সুপারম্যান, গারফিল্ড ইত্যাদি সম্পর্কে পছন্দের কমিক্স পড়ুন। কমিকসে খুব বেশি লেখা নেই এবং ছবিগুলো কী ঘটছে তা বুঝতে সাহায্য করে।
১৪. বিবিসি এবং সিএনএন-এর মতো সংবাদ রেকর্ডিং দেখুন বা শুনুন। নিউজকাস্টার স্ট্যান্ডার্ড উচ্চারণে কথা বলেন। বিবিসিতে ব্রিটিশ ইংলিশ এবং সিএনএন-এ আমেরিকান ইংলিশে।
১৫. অফিসে বা বাসায় টিভিতে গান না রেখে কিছু ইংরেজি খবর চালু করুন। স্বাভাবিকভাবে, আপনি কথোপকথন রপ্ত করতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন এবং ঘনঘন উচ্চারিত বাক্যগুলো কানে আটকে থাকবে, বিশেষ করে বিবিসি বা সিএনএন যখন নিউজফ্ল্যাশগুলো বারবার রিপিট করতে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ইংরেজি শিক্ষা
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য ইংরেজি শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগের জন্য ইংরেজি হলো প্রধান মাধ্যম। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন Upwork, Fiverr, Freelancer, বা Toptal-এ ভালো পারফর্ম করার জন্য আপনার যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করা প্রয়োজন। ক্লায়েন্টদের সাথে ভিডিও কল বা ভয়েস কল করতে হতে পারে।
তাই স্পোকেন ইংরেজিতে কথা বলা খুবই দরকার। আপনি যদি ভালো ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন তাহলে আপনি আপনার ক্লায়েন্টদের সঙ্গে ভালো করে কথা বলে আপনি কাজটি বুঝে নিতে পারবেন। এই জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ইংরেজি শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর আপনি যদি ইংরেজিতে ভালো করে কথা না বলতে পারেন তাহলে অন্য কারো সাহায্য নিয়ে ক্লায়েন্টের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মার্কেটিং করার কৌশল
নিজের কাজ নিজে বুঝে নেওয়ার জন্য ইংরেজি শিক্ষা খুবই প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে প্রোফাইল, প্রপোজাল, এবং কাজের বিবরণ ইংরেজিতে লিখতে হয়। আপনার কাজ বুঝতে ক্লায়েন্টের দেওয়া তথ্য বা নির্দেশ ভালোভাবে পড়া জরুরি। ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে ধৈর্য ধরুন এবং প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নতি করুন। ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়াতে হলে প্র্যাকটিসই হলো মূল চাবিকাঠি।
ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী
যেকোনো ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্মে, আপনি একটি প্রশ্নাবলি পূরণ করতে পারেন এবং একটি বায়োডাটা তৈরি করতে পারেন। আপনার কাজ, প্রকল্প, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট, ট্রেনিং, কাজের ওয়েবসাইট, ব্লগ, ফেইসবুক পেইজ ইত্যাদি যোগ করতে পারেন। আপনার পোর্টফোলিও দেখার পর, ক্লায়েন্ট সিদ্ধান্ত নেয় আপনাকে কাজ দেবে কী দেবে না। অতএব, একটি প্রোফাইল পূরণ করতে এবং আপনার কাজের একটি পোর্টফোলিও পূরণ করতে অবহেলা করবেন না।
অভিজ্ঞতা ছাড়া পোর্টফলিও কীভাবে করবেন
যদি একজন শিক্ষানবিশের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকে এবং ফলস্বরূপ, ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্মে একটি খালি পোর্টফোলিও থাকে, তা হলে কী হবে? এক্ষেত্রে দুটি উপায় আছে। প্রথমে, ক্লায়েন্টের অর্ডারটি বিনামূল্যে এই শর্তে পূরণ করুন যে, সম্পূর্ণ হওয়ার পরে আপনি এটি আপনার পোর্টফোলিওতে যোগ করবেন। দ্বিতীয়ত, কম খরচে কাজটি করুন।
ক্লায়েন্টরা স্বেচ্ছায় এই ধরনের একজন শিক্ষানবিশকে একটি অজরুরি সহজ কাজ দেয়। এ ছাড়া আপনার চেনা-জানা একজন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে এই কাজটি করিয়ে আপনার পোর্টফোলিও শক্ত করতে পারেন। সময়ের সাথে সাথে, আপনার পোর্টফোলিও কাজ দিয়ে পূর্ণ হবে, আপনি প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন এবং আপনার পরিষেবার দাম বাড়াতে সক্ষম হবেন।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী এবং ইংরেজি শেখার সহজ-সরল কিছু উপায় সম্বন্ধে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। এই উপায়গুলো অনুসরণ করে খুব সহজে আপনি বেকারত্ব দূর করে আর্থিক দিক থেকে সবল হতে পারবেন। আপনাদের এই সম্পর্কে জানাতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত এবং আপনাদের অনেক উপকার হবে এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং ভালো লেগে থাকলে ওয়েবসাইটটি শেয়ার করুন ধন্যবাদ।