অনলাইন বিজনেস আইডিয়া - অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি
অনলাইন বিজনেস আইডিয়া এবং অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি এ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
এই আর্টিকেলে আমরা আরো আলোচনা করছি অনলাইন ব্যবসা কিভাবে শুরু করা যায় এবং অনলাইন বিজনেস প্লান। এছাড়া আরো আলোচনা করছি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক এ সম্বন্ধে সেগুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
আমাদের জীবনে ইন্টারনেট, মুঠোফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক নিত্য সঙ্গী। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত একটা স্মার্টফোন-ই সবকিছু। হাতের কাছে একটা স্মার্ট ফোন থাকা মানে, জাগতিক সমস্ত কিছু হাতে নিয়ে চলা ফেরা করা। ক্ষুধা লাগছে, মোবাইলে খাবার আছে। দূরে কোথাও যাবেন, গাড়ি আছে। বই পড়বেন, মোবাইলে বই আছে।
সিনেমা দেখবেন, মোবাইল জুড়ে বিনোদন। বাসায় বাজার নিয়ে আসতে ভুলে গেছেন, গৃহিণী বকা দিবে? নো টেনশান, বাজার চলে আসবে বাসায়। বাচ্চার জন্য জামা কিনতে হবে, মোবাইলে অর্ডার দিন। কোরবানী দিবেন, গরু ছাগল লাগবে? ২০২০ সালে কোরবানী ঈদে মোবাইলে গরু বিক্রি করেছে অনলাইন ব্যবসায়ীরা।
অনলাইন বিজনেস A টু Z
অনলাইন বিজনেস আইডিয়া, তখন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো ও অনলাইনের মাধ্যমে গ্রাহককে খুঁজে নিচ্ছেন। আবার ক্রমবর্ধমান জ্যাম, যানবাহনের ঝামেলা থকে বাঁচতে আর সময় বাঁচাতে সবাই এখন খোঁজ রাখেন ফেইসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে। নানাবিদ কারণেই প্রতি নিয়ত হাজার হাজার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান অনলাইন এর সাথে জড়িত হচ্ছে।
এমন কোনো সেশন নেই যেখানে অনলাইন এর সম্পৃক্ততা নেই। অনলাইন বিজনেস-এর সামগ্রিক কাজ নির্ভর করে অনলাইনের উপর। পণ্য এবং সেবাকে মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবকিছুই অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে অনেকেই ঘরে বসে অনলাইন বিজনেসে অল্প সময়ে অধিক উপার্জন করার সুযোগ পাচ্ছে।
অনলাইন বিজনেস প্লান
পরিকল্পনা করুনঃ ব্যবসার প্রথম স্টেপ অনলাইন বিজনেস প্লানে পরিকল্পনা। পরিকল্পনা আপনার অনলাইন ব্যবসার প্রাথমিক কাজের অর্ধেক এগিয়ে রাখবে। তাই শুরুতে পণ্য বা সেবা নির্বাচন করুন। আপনি অনলাইন বিজনেসে কি পণ্য বা সেবা দিতে চাচ্ছেন, কোন শ্রেণির লোক মূলত আপনার ক্রেতা হবে, তা নির্দিষ্ট করুন। কী ওয়ার্ড পর্যালোচনা করুন, কি পরিমাণ সম্ভাব্য ক্রেতা আছে, কত গুলো প্রতিযোগী কোম্পানি আছে, আপনার অবস্থান, বাজেট, মার্কেটিং পলিসি কি হতে পারে তা নির্ধারণ করুন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন টাইপিং জব ডেইলি পেমেন্ট
পরিকল্পনা লিখুনঃ আপনার অনলাইন বিজনেস প্লান পণ্য বা সেবাকে সঠিক ভাবে ক্রেতার নিকট বোধগম্য করার জন্য কন্টেন্ট লিখুন, নিয়মিত কন্টেন্ট যেমন: কি কি পণ্য / সেবা দিচ্ছেন, এর সুবিধা কি কি, কাদের জন্য, এইরকম কন্টেন্ট। আপনার অনলাইন বিজনেসে কোম্পানির প্রোফাইল পেজ, কন্টাক্ট পেজ, প্রাইভেসী পেজ, টার্মস এন্ড কন্ডিশন পেজ এবং অন্য কোনো কোম্পানির সাথে এফিলিয়েট থাকলে ডিসক্লেইমার পেজ এন্ড ডিসক্লোজার পেজ তৈরী করুন।
অনলাইন ব্যবসা কিভাবে শুরু করা যায়
বিজনেস, ডোমেইন নেম রেজিস্টারঃ অনলাইন ব্যবসা কিভাবে শুরু করা যায় তা আপনাকে প্রথমে একটি অনলাইন ব্যবসা ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করতে হবে। তারপর ওই ওয়েবসাইটের ডোমেইন নাম নিবন্ধন করুন, এমন একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন। যেন নাম থেকেই আপনার বিজনেস এর ধরন বুঝা যায়, এতে করে মানুষ সহজে মনে রাখতে পারবে।
এক্ষেত্রে দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, দর্শনীয় স্থান এগুলোকে গুরুত্ব দিতে পারেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে বর্তমানে দেখা যায়, আপনার পছন্দের ডোমেইন আগে কেউ বুকিং দিয়ে রেখেছেন। সেক্ষেত্রে, ডট কম না নিয়ে আপনি ডট শপ নিতে পারেন। আর ডোমেইন যে নামে রেজিস্ট্রেশন করেন, অবশ্যই সে নামটার ট্রেড লাইন্সেস এবং কপিরাইট অফিসে যোগাযোগ করে দেখবেন, আপনার আগে এ নামে অন্যকেউ নিবন্ধন করেছেন কিনা।
ওয়েবসাইট তৈরি এবং ম্যানেজমেন্টঃ দোকানে যেমন বিভিন্ন সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখে, অনলাইনেও পন্য সাজিয়ে রাখা ও প্রদশনের জন্য ওয়েবসাইটের বিকল্প নেই। ওয়েবসাইট আজকের বাজারে দুই তিন হাজার টাকার ভেতরের অনেকে করে দেয়। এরকম ওয়েবসাইটে না থাকে ভাল নিরাপত্তা, না থাকে ইউজার ফ্রেন্ডলি।
আরো পড়ুনঃ গেম খেলে টাকা আয় বিকাশে 2024
এক দু মাস ঘুরতে ঘুরতে অধিকাংশ সময় দেখা যায়, ওয়েবসাইট উধাও। তাই ব্যবসার শুরুতে আর্থিক সমস্যা থাকলে, ধীরে স্বস্তিতে ওয়েবপেজ বানান। তবুও কম টাকায় হুটহাট কওে এমন কিছু বানাবেন না- যেটা আপনার ব্যবসা জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এমন একটি ওয়েবসাইট তৈরী করুন যেন আপনার পণ্য বা সেবাকে খুব সুন্দর ভাবে ক্রেতার নিকট উপস্থাপন করা যায়।
আর এটিই হলো আপনার অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম। আপনার ওয়েবসাইট কে অনলাইন করার জন্য ভালো মানের একটি হোস্টিং নির্বাচন করুন। এরপর আপনার ওয়েবসাইট এর নিয়মিত নিরাপত্তা চেক করুন, আপডেট করুন, ব্যাকআপ রাখুন এবং আরো কিভাবে ভালো বিজনেস করা যায় তা পর্যালোচনা করুন।
অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি
সামাজিক মাধ্যমে মার্কেটিংঃ অনলাইনে ব্যবসা করে অনেকে ইনকাম করছে। আপনিও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, নিয়মিত কনটেন্ট মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং, ও বিভিন্ন প্রকার লিংক বিল্ডাপ এর মাধ্যমে ভালো ভাবে অফ-পেজ এস এ ও করুন ফেইসবুক সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলো ভালভাবে পরিচালনা ও অন্যান্য কৌশলগুলো ও জানতে হবে। এইগুলো ঠিকমত জানলে আপনি নিয়মিত অনলাইনে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ মার্কেটিং করার কৌশল
সামাজিক মিডিয়া বিজনেস পেইজ খুলুনঃ ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রামে ওয়েবসাইট ছাড়াও কম খরচে আকর্ষণীয় শপ বাটন চালু করে বানিজ্যিক একাউন্ট খোলা যায়। নামে মাত্র একটি পেইজ ক্রিয়েট না করে, ইউটিউব দেখে দেখে সুন্দরভাবে পেইজ খুলুন। আর পেইজের শপে আপনার প্রোডাক্টগুলোর বিভিন্ন কালার, ক্যাটাগরী, প্রাইজ, বিস্তারিত বিবরণ সব দিয়ে আপলোড করুন। এতে আপনার পেইজটি দেখতেও সুন্দর লাগবে, কাস্টমারও অর্ডার করতেও সহজ হবে।
অনলাইন বিজনেস আইডিয়া
আমাদের দেশে একটি মিথ আছে, যারা ব্যবসা করেন; তারা পড়াশোনা করেননি। ঐসব ব্যবসায়ীদের অফিসে যারা চাকুরি করছেন, তারা বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে কাজ করছেন। বর্তমান সবকিছু অনলাইনমুখী হচ্ছে। শুরুর দিকে অনেকে অনলাইন ব্যবসাকে গুরুত্ব না দিলেও, এক করোনা এসে বুঝিয়ে দিয়েছে- আগামীতে অনলাইন বিজনেস আমাদের দেশেও আরও জনপ্রিয় হবে।
ট্রেডিশনাল বিজনেস ও অনলাইন বিজনেস পার্থক্য প্রচুর। যদিও যেকোন বিজনেস শুরুর আগেই স্টাডি করা প্রয়োজন আর অনলাইন যেকোন যেহেতু ভার্চুয়ালি হয় তাই আরও বেশি কেয়ারফুল হতে হয়। অনলাইন বিজনেস শুরুর আগে নিজের একটা ভিশন থাকা দরকার যেটাকে বলা হয় মাইন্ড-সেট। তাই আগে ভিশন ঠিক করে নিন।
হুট করে একটি ইকমার্স সাইট বানিয়ে বা ফেসবুক পেইজ খুলে অনলাইন ব্যবসায় ঝুঁকে পড়বেন না। মার্কেট বুঝুন, এ ব্যবসা সম্পর্কে অভিজ্ঞদের কাছে পরামর্শ নিন, অন্যদের সাথে থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করুন এবং স্টেপ বাই স্টেপ অনলাইন বিজনেস কাজ শুরু করুন।
গ্রামে অনলাইন ব্যবসা
প্রথমেই আপনার অনেক ক্রেতা তৈরি হবে না। শুরুতে পরিচিতদের আপনার বিজনেস সম্পর্কে জানান এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন রকমের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়লে আপনার আইডিয়া ও ক্রেতা দুটোই বাড়বে। আপনি গ্রামে অনলাইন ব্যবসা একজন সফল ব্যবসায়ী কখনো কর্মীর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকে না।
নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে ফেসবুক মার্কেটিং, ইনস্ট্রাগ্রাম মার্কেটিংসহ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ফেলুন। নিজে নিজে যখন ব্যবসার মার্কেটিং ও বিভিন্ন নিয়মকানুন জানতে পারবেন- তখন ছোট খাটো বিষয়ে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। তাই, প্রয়োজনে অনলাইন বিজনেস এর উপর একটি প্রফেশনাল কোর্স করে নিতে পারেন।
একটি কথা মনে রাখবেন, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত উপার্জন পেতে গেলে প্রতিটা বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। আন্তরিকভাবে নিয়মিত কাজ এবং পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে যে কোনো ব্যবসায় সফল হয়ে যায়।
আশাকরি আপনাদের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে জানাতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত এবং আপনাদের অনেক উপকার হবে। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মত ফলো করুন। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।