ইউটিউব মার্কেটিং কি - কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন
ইউটিউব মার্কেটিং কি এবং কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে নিম্নের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
ইউটিউব এর কথা জানেনা এরকম লোকের কথা খুব কমই পাওয়া যাবে। ইউটিউবে মার্কেটিং করেও অনেকে সফলতা অর্জন করছে। তবে কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এ বিষয়টি অনেকেরই অজানা রয়েছে। ইউটিউবে ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে অ্যাড এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়। অনলাইন মার্কেটিং সেক্টরের সম্পূর্ণ ধারণা পাল্টে দিয়েছে ইউটিউব প্লাটফর্ম।
কিছুদিন আগেও শুধুমাত্র টিভি বিজ্ঞাপনের উপর নির্ভর করত প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউটিউব সকলকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গিয়েছে। তবে কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এটি অনেক মার্কেটার দেরই ধারণা থাকে না। চলুন তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ইউটিউব মার্কেটিং কি এবং ইউটিউব মার্কেটিং কত প্রকার হয়ে থাকে সে বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। সুতরাং ইউটিউব মার্কেটিং করার সকল উপায় এবং কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন সে বিষয়গুলো এ টু জেড জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ইউটিউব মার্কেটিং কি
অনলাইন মার্কেটিং এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ইন্টারনেটের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেল এবং প্রচার করা হয়ে থাকে। সাধারণত যে সকল পণ্য ইন্টারনেট ভিত্তিক বিক্রি এবং প্রচার হয়ে থাকে সেগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং নামে পরিচিত। আর ডিজিটাল মার্কেটিংয়েরই অন্যতম একটি শাখা বা সেক্টর হল ইউটিউব মার্কেটিং।
ইউটিউব মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে পণ্য, সেবা, বা ব্র্যান্ড প্রচারের জন্য ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়। এটি ভিডিও কন্টেন্টের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর কৌশল। সোজা কথায় বললে ইউটিউব মার্কেটিং হল ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, তার নিজস্ব অথবা অন্য কারো পণ্য বিক্রি অথবা প্রচার প্রচারণার কাজ করার যে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে সেটি হল ইউটিউব মার্কেটিং।
একটি রিসার্চে প্রমাণ হয়েছে ১৫ বছরের মধ্যে প্রায় ৭৫% আমেরিকা বাসি তাদের বেশিরভাগ সময় কাটাই ইউটিউব প্লাটফর্মে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ইউটিউব একটিভ ইউজারের সংখ্যা প্রায় ২ বিলিয়নেরও বেশি। গুগলের পরেই এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি এন্টারটেইনমেন্ট এবং বিজনেসের সেক্টর হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
তাই কেউ যদি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে সে Social Media Marketing এর অংশ হিসেবে ইউটিউব মার্কেটিং কে খুব ভালোভাবে তার প্রফেশনাল লাইফে নিতে পারবে। তবে ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য একজন বিচারকে কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এ বিষয়টি জানার জন্য অবশ্যই ইউটিউব মার্কেটিং কি এবং এর সম্পর্কে সকল বিষয়গুলো পুঙ্খানু পুঙ্খানু রূপে জানতে হয়। আপনি যদি ইউটিউব মার্কেটিং শুরু করতে চান, তাহলে প্রাথমিকভাবে একটি কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরি করুন এবং আপনার লক্ষ্য দর্শকদের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং মানসম্মত ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করুন।
ইউটিউব মার্কেটিং কত প্রকার
ইউটিউব মার্কেটিং কি এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি আমাদের ইউটিউব মার্কেটিং কত প্রকার বা কত ভাবে করা হয় সে বিষয়টিও জানা প্রয়োজন। ইউটিউব মার্কেটিং সাধারণত দু ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি হল নিজস্ব পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ভিডিও নির্মাণ করে সেটি নিজস্ব চ্যানেলে আপলোড করে সেখান থেকে সেল অথবা প্রচারের বিষয়টি নিশ্চিত করার বিষয়টি।
দ্বিতীয়টি হল আপনার নিজস্ব কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস থাকবে না অন্য কারো আপনি প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের রিভিউ করে সেটির নিজস্ব চ্যানেলে প্রচার প্রচারণা করলেন। দ্বিতীয় বিষয়টিকে সাধারণত এফিলিয়েট মার্কেটিং এর অংশ হিসেবে ধরা হয়। আপনি যদি একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হন সে ক্ষেত্রে কোন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম গ্রহণ করার পর।
প্রাপ্য লিংক যদি ইউটিউব ভিডিওর ডেসক্রিপশনে দিয়ে দেন তাহলে সেই লিংকে ক্লিক করে যে সকল ভিউয়ার প্রোডাক্ট পারচেস অথবা সার্ভিস গ্রহণ করবে সেখান থেকে আপনি নির্দিষ্ট কমিশন পেয়ে যাবেন। সুতরাং বলা যাচ্ছে আপনি নিজস্ব পণ্য দিয়ে যেমন ইউটিউব মার্কেটিং করতে পারছেন। ঠিক তেমনি আপনার যদি নিজস্ব পণ্য অথবা সার্ভিস না থাকে।
সেক্ষেত্রেও অ্যাফিলিয়েট এর মাধ্যমে ইউটিউব মার্কেটিং খুব সহজেই করে, ভালো একটি অ্যামাউন্ট আর্নিং করতে পারছেন। তবে একজন বিচার কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এ বিষয়টিতে মার্কেটিং এবং ভিডিও আপলোড করার সময় ইউটিউব ভিডিও এসইও (SEO) সম্পর্কেও এ টু জেড ধারণা রাখতে হবে।
ইউটিউব মার্কেটিং করার সকল উপায়
ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যান্য সকল সেক্টরের মতো ইউটিউব মার্কেটিং করারও কিছু উপায় রয়েছে। অর্থাৎ কিছু বিষয় যদি আপনি সঠিকভাবে ফলো করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই ইউটিউব মার্কেটিং এ সফলতা অর্জন করতে পারবেন। অনেকে এড ক্যাম্পেইন করেও ইউটিউব মার্কেটিং বিষয়টি সম্পাদন করে থাকে।
কিন্তু youtube এমন একটি সেক্টর যদি আপনি এখানে অর্গানিক উপায়ে সেল নিয়ে আসতে পারেন। তাহলে যে ট্রাফিক জেনারেট হবে সেটি পরবর্তীতে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আরো বেশি ইম্প্রেশন তৈরি করবে। একটি ব্র্যান্ডকে পরিচিত করা এবং তার সচেতনতা বাড়ানো। নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করে ব্যবসা বাড়ানো।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন টাইপিং জব ডেইলি পেমেন্ট
বিক্রয় বৃদ্ধি পণ্য বা সেবার সরাসরি বিক্রয় বাড়ানো। সম্প্রদায় গড়ে তোলা ব্র্যান্ডের সাথে দর্শকদের একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করা। এজন্য আমরা সব সময় একজন ইউটিউব মার্কেটারকে সবসময়ই অর্গানিক মেথড ফলো করার কথা সাজেশন দিয়ে থাকি। চলুন তাহলে এবার কোন কোন উপায় গুলো অবলম্বন করে ইউটিউব মার্কেটিং করা যাবে অর্থাৎ ইউটিউব মার্কেটিং কি এবং ইউটিউব মার্কেটিং করার সকল উপায়গুলো নিচে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো।
ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা একটি সহজ প্রক্রিয়া, তবে সঠিক পরিকল্পনা এবং কিছু ধাপ অনুসরণ করলে চ্যানেলটি আরও কার্যকরী এবং পেশাদার দেখাবে। কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এই প্রশ্নটিতে অবশ্যই আপনার সর্বপ্রথমে একটি ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করতে হবে। ইউটিউব চ্যানেল চালানোর জন্য একটি গুগল অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক।
এক্ষেত্রে একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকা খুবই জরুরী। জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে সরাসরি ইউটিউবে সাইন আপ করলে প্রাথমিক পর্যায়ে ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করা হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যে বিষয় নিয়ে youtube চ্যানেল খুলছেন অর্থাৎ আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করা জরুরী।
প্রাথমিক অবস্থায় একটি ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করা হলেও, এর আনুষঙ্গিক কাজ অর্থাৎ চ্যানেল সেটআপ করার বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইউটিউবে লগইন করার পর, উপরের ডান দিকে আপনার প্রোফাইল আইকনটি ক্লিক করুন। মেনু থেকে "Create a Channel" অপশনটি সিলেক্ট করুন। একটি পপ-আপ উইন্ডো আসবে, সেখানে আপনার চ্যানেলের নাম লিখুন। প্রোফাইল ছবি আপলোড করুন (যদি থাকে) এবং "Create" বাটনে ক্লিক করুন।
ইউটিউব চ্যানেল সেটাপ
গুগল একাউন্ট বা জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করার পর আপনি ইউটিউবে আপনার ব্যান্ড অ্যাকাউন্টও তৈরি করতে পারবেন। কেননা ব্র্যান্ড একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি চাইলে পরবর্তীতে চ্যানেলের ইউজার নেম, ব্র্যান্ড নেম সহ সকল কিছু যেকোন মুহূর্তে এডিট করার সুযোগ পাবেন। চ্যানেল সেটআপের জন্য গুগল একাউন্ট দিয়ে লগইন করার পর "My Channel" অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর নিজের পছন্দমত নাম দিয়ে "Create channel" অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখানেই মূলত আপনি ব্র্যান্ড অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অনুমতিটি পেয়ে যাবেন। এরপরে আপনার পছন্দমত ব্র্যান্ড নেম দিয়ে একাউন্ট তৈরি করার কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। এরপর ব্র্যান্ড একাউন্ট কে আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী সাজাতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি
আপনি যদি মনে করেন চ্যানেল আইকন ও চ্যানেল আর্ট এর মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ডের সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দিতে চান সেটিও এখান থেকে করা সম্ভব। যাতে অন্য ইউজাররা আপনার চ্যানেল ও ব্র্যান্ড খুব সহজেই চিনতে এবং মনে রাখতে পারে।
ইউটিউব মার্কেটিং এবং ভিডিও তৈরি
ইউটিউব মার্কেটিং এর মূল হাতিয়ার হল প্রফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করা। আপনি যে প্রোডাক্ট অথবা বিজনেস করতে চাচ্ছেন সেই প্রোডাক্ট এর উপর যে ভিডিওগুলো তৈরি করবেন সেগুলো অবশ্যই কোয়ালিটিফুল হতে হবে। পাশাপাশি ভিডিও মেক করার সময় অবশ্যই উপস্থাপনা আনুষাঙ্গিক এবং স্পষ্ট হতে হবে।
সুতরাং ইউটিউব চ্যানেল তৈরি এবং ব্র্যান্ড সেটাপ করার পরবর্তী বিষয় হল আপনি যে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন সেই সম্পর্কিত ভিডিও নির্মাণ করা। আর এটি মূলত একজন ডিজিটাল মার্কেটার কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন সেটির অন্যতম ধাপ হিসেবে বিবেচিত। ভিডিও তৈরি করার সময় অবশ্যই পরিকল্পনা মত স্ক্রিপ্ট তৈরি করে নিতে হয়।
ভিডিও গুলো এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শক ভিডিওগুলো দেখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে পরিচালিত হবে এটি নির্ভর করে অনেকটা ইম্প্রেশনের ওপর। আপনার ভিডিও যদি প্রথম অবস্থায় বেশি সংখ্যক দর্শক উপভোগ করে তাহলে সেটি ইম্প্রেশন বৃদ্ধি হয়।
অর্থাৎ ভিডিওটি অনেক অনেক লোকের হোমপেজে অটোমেটিক চলে যায়। পাশাপাশি ভিডিওর উপস্থাপনা এবং পণ্যের কোয়ালিটি সম্পর্কে যদি অডিয়েন্স অবগত হতে পারে। ভিডিওর জন্য একটি আকর্ষণীয় টাইটেল, ডেসক্রিপশন, এবং ট্যাগ ব্যবহার করুন। আকর্ষণীয় এবং প্রফেশনাল থাম্বনেইল তৈরি করুন।
আরো পড়ুনঃ মার্কেটিং করার কৌশল
থাম্বনেইল ভিডিওর ক্লিক রেট বাড়াতে সাহায্য করে। ভিডিও তৈরির সময় আরো একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যেন অল্প সময়ের ভিডিওর মধ্যেই অডিয়েন্স আপনার ব্যবসা অথবা সার্ভিসের ব্যাপারে বিস্তারিত সকল ধারণা অর্জন করতে পারে। ভিডিও লং ভিডিও চাইতে বেশি কার্যকরী হয়ে থাকে। পরিশেষে অবশ্যই আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার সাথে ভিডিও মেক করতে হবে।
ইউটিউব ভিডিও এসিও (SEO)
ইউটিউব মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনার ভিডিওতে যত ভিউ আসবে সেই অনুযায়ী আপনার সেল বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য ভিডিওগুলো অপটিমাইজ করার প্রয়োজন পড়ে। কেননা এসিও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যতীত যদি ভিডিও আপলোড করা হয় সেক্ষেত্রে ভিডিওতে ইম্প্রেশন আসবে না এবং অধিক লোকের হোমপেজে সেটি আর যাবে না।
পাশাপাশি ভিডিওকে তালিকার প্রথম দিকে আনার কৌশল হল এসইও। আমরা যেমন Google এ কোন একটি বিষয় লিখে সার্চ দেই। সে বিষয়টি সম্পর্কে যে সকল আর্টিকেল এসইও করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা রয়েছে। সেগুলো উপরের দিকে চলে আসে। ঠিক তেমনি ইউটিউবে যদি আপনি কোন একটি প্রোডাক্ট সম্পর্কে সার দেন যেই ভিডিওতে ভালোমতো এসি ও করা থাকবে সেটি আপনার সামনে চলে।
সুতরাং কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এই প্রশ্নতে এসইও সম্পর্কে জ্ঞান রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যদিও ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে পরিচালিত হবে সেটি নির্ভর করে কনটেন্ট এর কোয়ালিটির উপর। পাশাপাশি অবশ্যই কোয়ালিটির সঙ্গে সঠিক ভিডিও এসিও করতে হবে। ভিডিওর জন্য সঠিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। ভিডিও আপলোডের সময় ভিডিও টাইটেল, ট্যাগ এবং ডেসক্রিপশনে জনপ্রিয় কিওয়ার্ড যোগ করুন। আপনার ভিডিও শেয়ার করুন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এবং টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভিডিও তৈরি এবং প্রমোট
ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই ভিডিও তৈরি করার পাশাপাশি ইউটিউব ভিডিও গুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রমোট করতে হবে। আপনি যে ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে পণ্য অথবা সেবার উৎপাদন করার পর সেটিকে প্রচারণার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার পণ্য অথবা সার্ভিসের বিষয়টি মানুষের কাছে জানান দিতে চান সে ক্ষেত্রে ভিডিও তৈরি, আপলোড এবং প্রমোট করার এ তিনটি বিষয়ে অবশ্যই নজর দেওয়া প্রয়োজন।
যেহেতু আপনি ব্যবসার জন্য ইউটিউব চ্যানেলটি ব্যবহার করছেন, সে ক্ষেত্রে ইন্টারনেট কেন্দ্রিক যে প্ল্যাটফর্ম গুলো রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে ভিডিওগুলো প্রমোট করুন। অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সেক্টরগুলো হলো Facebook, Instagram, Twitter, Blog, Website ইত্যাদি। এইসব মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই ভিডিওগুলো ইন্টারনেটে প্রমোট করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা
ফেসবুক, টুইটারে ভিডিওগুলো শেয়ার দিলে এখান থেকে উপযুক্ত দর্শক বা অডিয়েন্স খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। আর এ সকল বিষয়কে মাথায় রেখে একজন ডিজিটাল মার্কেটার কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন সে বিষয়টি পরিষ্কার ভাবে জানা যায়।
ইউটিউব মার্কেটিং কোর্স
ইউটিউব মার্কেটিং করে ইনকাম করার জন্য সবচেয়ে ভালো একটি মাধ্যম হলো ইউটিউব মার্কেটিং কোর্স করা। তবে বর্তমান সময়ে অনেক আইটি সেন্টার গড়ে উঠেছে যারা কোর্স করানোর নাম করে শুধু শুধু টাকা নিয়ে থাকে। এজন্য ইউটিউব মার্কেটিং কোর্স করার জন্য ভালো মানের আর্টি সেন্টার দেখেশুনে ভর্তি হতে হবে।
যে সকল আইটি সেন্টারের গাইডার ইউটিউব মার্কেটিং নিয়ে পূর্বে কাজ করেছে বা বর্তমানেও কাজ করছে সে সকল আইটি সেন্টারে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন। এর কারণ হলো যে সকল গাইডার অথবা মেনটর পূর্বে তাদের youtube অভিজ্ঞতা ছিল তারাই আপনাকে সঠিক গাইডলাইন প্রদান করতে সক্ষম হবে। অনেক আইটি সেন্টার রয়েছে যারা ইউটিউব মার্কেটিং শেখানোর নাম করে শুধুমাত্র ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করা, ভিডিও আপলোড করা শিখিয়ে থাকে।
youtube মার্কেটিং কোর্সগুলোর মধ্যে অবশ্যই চ্যানেল ক্রিয়েট করা থেকে শুরু করে ভিডিও আপলোড এবং সেটি সঠিকভাবে এসিও করতে কোন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় এ টু জেড শেখানো হয়ে থাকে। নিচে কয়েকটি আইটি সেন্টারের নাম দেওয়া হল যারা ইউটিউব মার্কেটিং কোর্স করিয়ে থাকে এবং তাদের কোর্স সম্পূর্ণ করে অনেকেই ইউটিউবে তাদের ক্যারিয়ার গড়ে ফেলেছে।
- 10 Minute School
- Interactive Cares
- eShikhon
- Bohubrihi
- Ghoori Learning
- CodersTrust
- Innovative IT
কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন
ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হতে হলে অবশ্যই উপরে বর্ণিত যে পদক্ষেপগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো খুব ভালোভাবে ফলো করতে হবে। এছাড়াও ইউটিউব মার্কেটিং কি এর মূল বিষয় হলো পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়। বিষয়টি এমন নয় যে আপনার পন্য আজকে ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা শুরু করলেন কালকে থেকেই আপনি সফলতা পেয়ে যাবেন।
মার্কেটিং সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করার পাশাপাশি ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে কিভাবে ভিউজ আনা হয়। সে বিষয়গুলো সম্পর্কে সবসময় নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। লং ভিডিও আপলোড করে সেখান থেকে যদি সেল আনতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ইউটিউব ভিডিও প্রফেশনাল এবং খুবই অ্যাট্রাক্টিভ হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন
চলুন তাহলে এবার কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এ বিষয়গুলো পয়েন্ট আকারে জেনে নেওয়া যাক। ভিডিও তৈরি করার সময় অবশ্যই সাবলীল এবং সৃজনশীল উপস্থাপনা পরিবেশন করতে হবে। ভিডিও এডিটিং খুব ভালো মানের এবং কোয়ালিটি ফুল হতে হবে যেন অডিয়েন্স দেখে আকর্ষণ বোধ। ভিডিওর বিষয়বস্তু খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে বলার চেষ্টা করতে হবে যেন খুব সহজেই উক্ত পণ্য অথবা সার্ভিসের অডিয়েন্স খুব ভালোভাবে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে।
Youtube চ্যানেলে আপলোডকৃত ভিডিওগুলো অবশ্যই ১০০ পার্সেন্ট এসিও করেই কেবলমাত্র আপলোড দিতে হবে। সঠিক অডিয়েন্স এর কাছে রিচ করার পাশাপাশি অবশ্যই সেই সকল কাস্টমারদের বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে হবে। যদি সমস্যাগুলো জানতে পারা যায় তাহলে অবশ্যই সেই সমস্যার সমাধান খুঁজে দিতে হবে।
প্রত্যেকটি ভিডিওতে প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিসের সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সঠিকভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ভিডিওতে ট্যাগ সেকশনে ট্যাগ দিয়ে দিতে হবে যেন ভিডিও র্যাংক করে। প্রত্যেকটি ভিডিও ডেসক্রিপশন এমনভাবে লিখতে হবে যেন প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিসে বর্ণনা খুব সহজেই একজন অডিয়েন্স বুঝতে পারে।
কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এই প্রশ্নটি অবশ্যই ভিডিওর থামনেইল তৈরির ব্যাপারে প্রফেশনালি করতে হবে। কেননা ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে পরিচালিত হবে সেটি নির্ভর করে অনেকটা থামনেইলের ওপর। নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড করুন। দর্শকদের সাথে কমেন্ট এবং লাইভ সেশনের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকুন। প্রতিযোগীদের ভিডিও দেখুন এবং নতুন আইডিয়া গ্রহণ করুন। ধৈর্য ধরে কাজ চালিয়ে যান। চ্যানেল গ্রোথে সময় লাগতে পারে।
শেষের কথা
কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এই প্রশ্নতে আমরা অবশ্যই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করার পাশাপাশি সেখানে পরিশ্রম সময় অর্থ সবগুলোই বিনিয়োগ করার কথা বলা হচ্ছে। সুতরাং আপনি যদি ইউটিউব মার্কেটিং করে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রথমে জানতে হবে ইউটিউব মার্কেটিং কি এবং youtube মার্কেটিং কিভাবে বিষয়টি পরিচালিত হচ্ছে।
এরপর উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি পদক্ষে বা বিষয় সম্পর্কে আপনার সঠিকভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এরপরও যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সিং এবং অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত অনেক আর্টিকেল পাবলিশ করেছি। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে আসতে পারেন। পাশাপাশি আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন এ বিষয়টি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর জন্য অবশ্যই একটি শেয়ার করতে পারেন।