অযুর সময় দুআ - অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে

সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে তিরমিজিতে বর্ণিত- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাথরুম থেকে বের হয়ে এ দুআটি পড়তেন-

غُفْرَانَكَ

উচ্চারণঃ গুফরানাকা

অর্থঃ আমি আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।২
অযুর সময় দুআ - অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাথরুম থেকে বের হয়ে এ দুআ পড়তেন-


হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাথরুম থেকে বের হয়ে এ দুআ পড়তেন-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذَاقَنِي لَذَّتَهُ، وَأَبْقَى فِي قُوَّتَهُ ، وَأَذْهَبَ عَنِّي أَذَاهُ

উচ্চারণঃ আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি আযাকানি লাযযাতাহু, ওয়া আবকা ফিয়্যা কুওয়াতাহু, ওয়া আযহাবা আন্নি আযাহু।

অর্থঃ প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এই খাদ্যের স্বাদ আস্বাদন করিয়েছেন, এর শক্তি আমার ভিতরে রেখে দিয়েছেন এবং এর কষ্টদায়ক বস্তু দূর করে দিয়েছেন।

অযুর সময় দুআ


অযুর পানি ঢালার সময় 'বিসমিল্লাহ' বলা
অযুর পানি ঢালার সময় 'বিসমিল্লাহ' পড়া মুস্তাহাব।

অযুর শুরুতে যে দুআ পড়বে

অযুর সময় দুআ - অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে
অযুর শুরুতে 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম' বলা মুস্তাহাব। শুধু 'বিসমিল্লাহ' বললেও চলবে। শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে মাঝখানে পড়ে নিবে। অযুর শেষে মনে হলে আর বলতে হবে না। অযু হয়ে যাবে। চাই তা ইচ্ছাকৃত হোক বা ভুলক্রমে হোক। এটা আমাদের ও অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মাজহাব।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি অযুর শুরুতে 'বিসমিল্লাহ' বলেনি, তার অযু হয়নি অর্থাৎ তার অযু পূর্ণাঙ্গ হয়নি।

অযুর শেষের দুআ

অযুর সময় দুআ - অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে
অযুর শেষে এ দুআ পড়বে-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْني مِنَ المُتَطَهِّرِينَ، سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِنَّا أَنتَ. أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ

উচ্চারণঃ আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু। আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাত-তাওয়াবিনা ওয়াজ আলনি মিনাল মুতাতাহহিরিন। সুবহানাকাল্লাহুম্মা, ওয়াবিহামদিকা, আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা।

অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তাঁর কোন শরীক নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিশেষ বান্দা ও রাসুল। হে আল্লাহ, আমাকে তাওবাকারী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আপনার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করছি।'
উমর বিন খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- অযুর পর যে ব্যক্তি নিচের দুআটি পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। দুআটি হল-
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

উচ্চারণঃ আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ও আশহাদু আন্না মুহম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। তার কোন অংশীদার নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিশেষ বান্দা ও রাসুল।'
তিরমিজি শরিফে অতিরিক্ত আছে-

اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ، وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাত-তাওয়াবিনা ওয়াজ আলনি মিনাল মুতাতাহহিরিন।

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমাকে তাওবাকারী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।
অন্য বর্ণনায় আছে-

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ

উচ্চারণঃ সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা।

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি আপনার প্রশংসার সাথে।'
উমর বিন খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- অযুর পর কোন কথা বলার আগে নিম্নোক্ত দু'আটি পড়লে পূর্বের অযু এবং এ অযুর মাঝের সমস্ত (সাগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। দুআটি হল-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

উচ্চারণঃ আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিশেষ বান্দা ও রাসুল।'
হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- উত্তমরুপে অযু করার পর নিচের দুআটি তিনবার পড়লে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَةً لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

উচ্চারণঃ আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিশেষ বান্দা ও রাসুল।'
শাইখ আবুল ফাতাহ নাসর মাকদিসি রহ. বলেন, উক্ত দুআ সমূহের সাথে যুক্ত করবে-

اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلَّمْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়া সাল্লিম আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ।

অর্থঃ হে আল্লাহ, মুহাম্মাদ ও তার পরিবারের প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।

অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে

অযুর সময় দুআ - অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে
অযুর মাঝে পড়ার জন্য অর্থাৎ অঙ্গসমূহ ধোয়ার সময়ে কোনো দুআ পড়া রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়নি। 
আরো পড়ুনঃ ঘুমের সময় দুআ
তবে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, পূর্বসূরী বুযুর্গদের থেকে কিছু দুআ বর্ণিত হয়েছে, যেগুলো পড়া মুস্তাহাব। দুআগুলো নিম্নরুপ-
(১) বিসমিল্লাহ বলার পরে পড়বে-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي جَعَلَ الْمَاءَ طَهُورًا

উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি জাআলাল মাআ তাহুরা।

অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি পানিকে পবিত্র করেছেন।
(২) কুলি করার সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ اسْقِنِي مِنْ حَوْضِ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ كَأْسًا لَا أَعْلَمَا بَعْدَ هَا أَبَدًا

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাসকিনি মিন হাউযি নাবিয়্যিকা মুহাম্মাদ, কাসান লা আযমাউ বা'দাহা আবাদান।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাকে আপনার নবির হাউজ থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যা পান করার পর কখনো তৃষ্ণার্ত হবো না।
(৩) নাকে পানি দেয়ার সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ لَا تَحْرِ مُنِي رَائِحَةً نَعِيمِكَ وَجَنَّاتِكَ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনি রা-ইহাতা নাঈমিকা ওয়া জান্নাতিকা।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাকে আপনার নেয়ামতরাজি ও জান্নাতের সুগন্ধি থেকে বঞ্চিত করবেন না।
(৪) মুখ ধোয়ার সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ بَيِّضُ وَجْهِي يَوْمَ تَبْيَضُ وُجُوهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوهٌ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বাইয়িদ ওয়াজহি ইয়াওমা তাবয়াদ্দু উজুহুন, ওয়া তাসওয়াদ্দু উজুহুন।

অর্থঃ হে আল্লাহ! সেদিন আমার মুখ উজ্জ্বল করুন, যেদিন কোনো কোনো মুখ উজ্জ্বল হবে, আর কোনো কোনো মুখ হবে কালো।
(৫) দুই হাত ধোয়ার সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ أَعْطِنِي كِتَابِي بِيَمِينِي اللَّهُمَّ لَا تُعْطِنِي كِتَابِي بِشِمَالِي

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আ'তিনী কিতাবি বিয়ামিনি, আল্লাহুম্মা লা তু'তিনী কিতাবি বিশিমালি।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার আমলনামা ডান হাতে দান করুন। হে আল্লাহ! বামহাতে আমলনামা দিয়েন না।
(৬) মাথা মাসাহের সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ حَرِّمُ شَعْرِي وَبَشَرِيْ عَلَى النَّارِ ، وَأَطِينِي تَحْتَ ظِلِ عَرْشِكَ يَوْمَ لَا ظِلَّ إِنَّا لِلْكَ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা হাররিম শা'রি ওয়া বাশারি আলান নার, ওয়া আযিললিনি তাহতা যিল্লি আরশিকা ইয়াওমা লা যিল্লা ইল্লা যিল্লুকা।

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমার চুল ও চামড়াকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিন। আর যেদিন আপনার ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না সেদিন আমাকে আপনার আরশের নিচে ছায়া দান করুন।
(৭) কান মাসাহ করার সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ الَّذِينَ يَسْتَمِعُونَ القَوْلَ فَيَتَّبِعُونَ أَحْسَنَهُ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাল্লাযিনা ইয়াসতামিউনাল কাওলা ফাইয়াত্তাবিউনা আহসানাহু।

অর্থঃ হে আল্লাহ! যারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে এবং উত্তম কথার অনুসরণ করে আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।
(৮) দুই পা ধোয়ার সময় পড়বে-

اللَّهُمَّ ثَبِتُ قَدَمِي عَلَى الصِّرَاطِ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সাব্বিত কাদামি আলাস সিরাতি।

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমাকে সিরাতে মুসতাকিমের উপর অটল রাখুন।
আবু মুসা আশআরি রা. বলেন, আমি অযুর পানি নিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলাম। অযুর সময় আমি রাসুলকে এ দুআ পড়তে শুনলাম-

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي ، وَوَسِعُ لِي فِي دَارِي، وَبَارِكْ لِي فِي رِزْقِي

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগফির লি যামবি, ওয়া ওয়াসসি'লি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযকি।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন, আমার ঘরে প্রশস্ততা দান করুন এবং আমার রিযিকে বরকত দান করুন।
অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর নবি, আমি আপনাকে অমুক অমুক বিষয়ে দুআ করতে শুনলাম? নবিজি বললেন, আর কী কিছু রয়ে গেল? (অর্থাৎ এ দুআর মধ্যে তো সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত আছে)।১

গোসলের সময় যে দুআ পড়বে


অযুর মতই গোসলের শুরুতে বিসমিল্লাহ ও অন্যন্য দুআ পড়া মুস্তাহাব। এক্ষেত্রে ফরজ গোসলকারী, ঋতুবতী নারী এবং অন্যদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। তবে শর্ত হল- বিসমিল্লাহ পড়ার সময় কুরআনের আয়াত মনে করে পড়বে না। শুধু দুআ হিসেবে পড়বে।

তায়াম্মুমের দুআ

অযুর সময় দুআ - অযুর মাঝে যে দুআগুলো পড়বে
তায়াম্মুমের শুরুতেও 'বিসমিল্লাহ' বলা মুস্তাহাব। গোসলের মত তায়াম্মুমের ক্ষেত্রেও ফরজ গোসলের জন্য তায়াম্মুমকারী, ঋতুবতী নারী এবং অন্যদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। সকলেই বিসমিল্লাহ বলবে।

মসজিদে যাওয়ার সময় যে দুআ পড়বে


পূর্বে ঘর থেকে বের হওয়ার দুআ উল্লেখ করা হয়েছে। মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলে উক্ত দুআর সাথে নীচের দুআটিও পড়া মুস্তাহাব।

হযরত ইবনে আব্বাস রা থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর খালা মায়মুনা রা. এর ঘরে রাত্রিযাপন করলেন। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাহাজ্জুদ নামাযের কথা বর্ণনা করে বলেন, যখন মুআজ্জিন ফজরের আযান দিল, তখন তিনি ফজর নামাযের জন্য বের হলেন, তখন তিনি এ দুআ পড়ছিলেন-

اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا، وَفِي لِسَانِي نُورًا، وَاجْعَلْ فِي سَبْعِي نُوْرًا، وَاجْعَلْ فِي بَصَرِي نُورًا ، وَاجْعَلْ مِنْ خَلْفِي نُورًا ، وَمِنْ أَمَا مِي نُورًا ، وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِي نُورًا، وَمِنْ تَحْتِي نُورًا. اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نُورًا

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজআল ফি কালবি নূরা, ওয়া ফি লিসানি নূরা, ওয়াজআল ফি সাময়ী নূরা, ওয়াজআল ফি বাসারি নূরা, ওয়াজআল ফি খালফি নূরা, ওয়া মিন আমামি নূরা, ওয়াজআল ফি ফাওকি নূরা, ওয়ামিন তাহতি নূরা, আল্লাহুম্মা আ'তিনি নূরা ।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার অন্তরে, যবানে, কানে এবং চোখে নুর দান করুন। আমার পেছনে, সামনে, উপরে এবং নিচে নুর দান করুন। হে আল্লাহ! আমাকে নুর দান করুন।'
হযরত বিলাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের জন্য বের হলে এ দুআ পড়তেন-

بِسْمِ اللهِ ، آمَنْتُ بِاللهِ ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِنَّا بِاللَّهِ ، اللَّهُمَّ بِحَقِّ السَّائِلِينَ عَلَيْكَ ، وَبِحَقِّ مَخْرَ جِي هُذَا ، فَإِنِّي لَمْ أَخْرُجُهُ أَشَرًا وَلَا بَطَرًا وَلَارِ يَاء وَلَا سُمْعَةً ، خَرَجْتُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِكَ، وَالْقَاءَ سَخَطِكَ ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُعِيدَنِي مِنَ النَّارِ وَأَنْ تُدْخِلَنِي الْجَنَّةَ.

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি আমানতু বিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি, আল্লাহুম্মা বিহাক্কিস-সা ইলিনা আলাইকা, ওয়া বিহাক্কি মাখরাজি হাযা, ফাইন্নি লাম আখরুজহু আশারান, ওয়া লা বাতারান ওয়া লা রিয়াআন, ওয়া লা সুম'আতান, খরাজতু ইবতিগাআ মারযাতিকা ওয়া ইত্তিকায়া সাখাতিকা, আসআলুকা আন তুঈযানি মিনান-নারি ওয়া আন তুদখুলানিল জান্নাতা।

অর্থঃ আল্লাহর নামে রওনা করলাম, ঈমান আনলাম আল্লাহর উপর এবং তার ওপরই ভরসা করলাম। আল্লাহ ছাড়া নেক কাজ করা বা খারাপ কাজ থেকে বাঁচার কোনো শক্তি নেই। হে আল্লাহ, আপনার কাছে সুওয়ালকারী ব্যক্তিদের এবং আমার এই বের হওয়ার ওসিলায় প্রার্থনা করছি। আমি উৎফুল্লতা, অহমিকা, লৌকিকতা ও সুখ্যাতির জন্য বের হইনি। বের হয়েছি কেবল আপনার সন্তুষ্টি অর্জন এবং অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচার জন্য। আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করুন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন